পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সালতামামি \98S হওয়া বাঞ্ছনীয়, তিনি তার কল্পনার চক্ষে ভবিষ্যতের পটে সমাজের সেই নবমূৰ্ত্তি দেখেছেন। মানুষের পক্ষে এই সর্বনাশের অন্তরে একটা সৰ্বসিদ্ধির রাজ্যের আবিস্কার করাও নিতান্ত স্বাভাবিক এবং একেবারে অবৈধ নয়। এত বড় একটা ব্যাপার হয়ে গেল, অথচ মানবসমাজ যেখানে যেমন ছিল, ঠিক সেখানে তেমনি থাকবে- এ কথা মনে করাও অসম্ভব। এত নরবলিদানেও দেবতা যদি মানুষের উপর প্রসন্ন না হন, তাহলে মানব-জাতির মরাই শ্রেয় ;- অথচ মানুষে বাঁচতেই চায়, মরতে SR এ যুদ্ধের ফল যে অপূৰ্ণ হবে, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই, তবে সে ফল, সুফল কি কুফল হবে, সেই নিয়েই ত যত ভাবনা। প্রথম থেকেই আমার ধারণা ছিল যে, এ যুদ্ধে মানুষের মনের কি পরিবর্তন হয়, তার উপরই তার ভবিষ্যৎ সামাজিক ফলাফল নির্ভর করবে। এবং ঘরে বসে কেউ আন্দাজ করতে পারেন না যে, মানুষের মন কোন অবস্থায় কোন দিকে যাবেবিশেষত সে অবস্থাটা যদি একেবারে বিপৰ্য্যস্ত অবস্থা হয়। জাৰ্ম্মণী যে মানব-সমাজে ন্যায়ের অপেক্ষ বলের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যই খড়গহস্ত হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ করবার কোনও কারণ নেই ; কেননা গত চল্লিশ বৎসর ধরে জাৰ্ম্মাণী এই বলের সাধনা তার নবধৰ্ম্ম করে তুলেছে, এবং তার গুরুপুরোহিতেও সমগ্ৰ জাতটাকে এই শক্তিমন্ত্র দীক্ষিত করেছে। এই নবধৰ্ম্ম দেবদানবের ধৰ্ম্ম হতে পারে, কিন্তু মানবের নয়। সুতরাং জাৰ্ম্মণী হারুক আর জিতুকী—এই অমানব বা অতিমানব ধৰ্ম্ম অপর মানবের মনের উপর কতদূর প্ৰভুত্ব লাভ করবে- সেইটেই ছিল আসল জানিবার বিষয়।