পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ॐ मांन-क्षॆ। । “ন চ পূর্ণ নচাংশ চ” তাদেরও যে চৈতন্য চেতন করে তোলেন নি-এ কথাও বলা চলে না। চৈতন্য কখনও ধৰ্ম্ম-শাস্ত্রের দোহাই দেনও নি, মানেনও নি। এর জন্য অবশ্য তঁর সমসাময়িক শাস্ত্রব্যবসায়ীরা তাকে বিধিমত জ্বালাতন করতে চেষ্টা করে, ছিলেন। এমন কি ভাগবস্তুক্তিতে মৃগী বলে, তারা শচীমাতাকে, ওঝা ডাকিয়ে মহাপ্ৰভুকে ঝাড়াফুকো করবার, ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। কিন্তু চৈতন্য যে ভাবের বন্যা এনেছিলেন তাতে সমগ্ৰ দেশ ভেসে গেছে ;-শাস্ত্রের বঁাধ তাকে আটকে রাখতে পারে নি। ভারতবর্ষে তিনিই সর্বপ্রথমে যুগধৰ্ম্ম’ বলে যে একটি জিনিষ আছে সে কথা স্বজাতিকে বুঝিয়ে দেন। এই “যুগধৰ্ম্ম”। অতীতের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন না হলেও বিভিন্ন। শাস্ত্রের ধৰ্ম্ম হচ্ছে অতীতের “যুগাধৰ্ম্ম” ; সুতরাং বৰ্ত্তমানের “যুগধৰ্ম্ম৷” শাস্ত্রের সম্পূর্ণ অধীন হতে পারে না। আমরা বাংলা দেশের নব্য-তান্ত্রিকেরা বর্তমানের “যুগধৰ্ম্ম” অনুসারেই জীবন গঠন করবার চেষ্টা করছি। সে জীবন শাস্ত্রের দ্বারা কেউ সম্পূর্ণ শাসিত করতে পারবে না। যদি কেউ বলেন যে, স্বয়ং চৈতন্যও যখন এ সমাজ ভেঙ্গে নতুন সমাজ গড়তে পারেন নি, তখন তোমরা কি ভরসায় হিন্দু সমাজকে ভেঙ্গে গড়তে চাও ? ও চেষ্টার ফলে বড় জোর তোমরা একটি নূতন ভেকধারীর দল গড়বে। এর উত্তরে আমাদের বক্তব্য এই যে, কেবল মাত্র মনের জোরে সমাজের সম্পূৰ্ণৰদল করা যায় না,-যদি না সামাজিক অবস্থা সেই মনের সহায় হয়। চৈতন্যর সময় এমন কোনও বাহ ঘটনা ঘটে নি, যাতে করে সমাজকে পরিবর্তিত হতে বাধ্য করতে পারত। তখনকার সমাজের গায়ে কৰ্ম্ম-জীবনের প্রবল ধাক্কা লাগে নি।