পাতা:নানা রচনা - এমিল জোলা.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জিনিসটা এইভাবে নষ্ট হ’য়ে যাওয়ায় নানা বেশ একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। ফিলিপিকে সাস্তুনা দিতে সে বললো—আহা! এমন সুন্দর জিনিসটি ভেঙে গেল! এই কথা বলেই সে একেবারে খিল-খিল করে হেসে উঠলো ছেলেমানুষের মত । জিনিস নষ্ট করবার বা নষ্ট হয়ে যেতে দেখবার আনন্দে খুশী হ’য়ে উঠেছিল নানা, তাই তার এত হাসি ! হাসতে হাসতেই সে মন্তব্য করলো।--বেশ লাগে। কিন্তু জিনিসগুলো ভাঙতে দেখলে, তাই না ? ফিলিপি কিন্তু একেবারেই চুপ করে গেল। তার মনে খুবই আঘাত লেগেছিল তার দেওয়া উপহারটা ঐভাবে নষ্ট হ’য়ে যেতে দেখে। এর উপর আবার নানাকে হাসতে দেখে সে আর সহ্য করতে পারলে না। বেশ কিছুটা আহত সুরেই সে বললো।--তুমি হাসছে নানা ! কিন্তু তুমি যদি জানতে যে, কি করে আমি এই জিনিসটা দুঃখে আর অভিমানে তার মুখ দিয়ে আর কোন কথাই বের হ’লো না! ফিলিপির অবস্থা দেখে নানা বললো - ভেঙেছে তো কি হয়েছে ! ওটা ভাঙলেও তোমার আমার ভিতরের ভালবাসা তো আর ভাঙেনি ! ফিলিপির মুখখানা তখনও আঁধার হয়ে রয়েছে দেখে নানা বললো— তোমার উপহারের জিনিসটা ভেঙেছে এই দুঃখ তো তোমার ? তা হ’লে এই দ্যাখো, তোমার সামনেই আমি সব উপহার ভেঙে ফেলছি। এই বলে সত্যি সত্যিই নানা উপহারের জিনিসগুলো একে একে মেঝের উপরে ছুড়ে ফেলে দিতে লাগলো। জিনিসগুলো যতই ভাঙে, নানার আনন্দও ততই বাড়ে। ধ্বংসের আনন্দে মেতে উঠলে সে। . দেখতে দেখতে সবগুলো জিনিসই ভেঙে ফেললে নানা । ভাঙা শেষ করে আনন্দে হাততালি দিয়ে হাসতে লাগলে সে। নানার এই ধ্বংসযজ্ঞের পাশবিক আনন্দে ফিলিপিও যোগ দিল । সেও তখন হাসতে লাগলো নানার সঙ্গে । > ○○