দেখিলেন, তাহার মুখ বিবর্ণ হইয়াছে, তাহার চক্ষুতে উদ্বেগ ও আতঙ্কের চিহ্ন সুপরিস্ফুট।
পাচক ডড লের পাশে আসিয়া নিম্নম্বরে কহিল, “তোমার কথাই সত্য। উঃ, কি ভয়ঙ্কর শয়তানী! মিস্ এরস্কাইনের মত সুন্দরী সুশীল সরলা যুবতীকে যাহারা এইভাবে বিষ খাওয়াইয়া মারিবার চেষ্টা করে,—তাহারা মানুষ না পিশাচ?”
ডড্লে বলিলেন, “আমার কথা যে সত্য, ইহা তুমি কিরূপে জানিলে? তুমি ত সেই ব্রথের পেয়ালা আন নাই, ব্রথের গুণাগুণেরও পরীক্ষা হয় নাই।”
পাচক বলিল, “সে পরীক্ষা হইয়া গিয়াছে।—ভয়ঙ্কর ব্যাপার।”
ডড লে কৌতূহল দমন করতে না পারিয়া বলিলেন, “কি হইয়াছে শুনিতে পাই না?”
পাচক গম্ভীর মুখে বলিল, “খানিক আগে ষ্টুয়ার্ড জানালা হইতে সেই ব্রথের পেয়ালাটি তাহার কুঠুরীতে লইয়া যায়। লোকটা ভয়ঙ্কর পেটুক, কিছুতেই তাহার পেট ভরে না। এক পেয়ালা ব্রথ্ ফেলিয়া দিবে—এমন পাত্র সে নহে। সে কুঠুরীতে ঢুকিয়াই এক চুমুকে ব্রথ্টুকু নিঃশেষ করে। আধ ঘণ্টা যাইতে-না-যাইতে বেচারার পেটে জ্বালা আরম্ভ হইল। সে যন্ত্রণায় ছটফট, করিতে লাগিল, আমাকে দেখিবামাত্র কাঁদিয়া বলিল, “আর বুঝি বাঁচিলাম না। আমি যে ব্রথ্ খাইয়াছি তাহা বিষ-মিশান ছিল। হাঁ, নিশ্চয়ই তাহা বিষাক্ত, নতুবা আমার এত যন্ত্রণা হইবে কেন? আর দেশে যাইতে পারিলাম না। হায়, হায়, লোভে পডিয়া কি কুকর্ম্মই করিয়াছি।’—বেচারা প্রাণভয়ে অস্থির হইয়া ল্যাম্পিয়নের নিকট ছুটিয়া গেল, তাহাকে বলিল, ডাক্তার, আমি বুঝি মরিলাম। আমি ব্রথ্ খাইয়া বিষের জ্বালায় অস্থির হইয়াছি। দয়া করিয়া আমাকে একটা ঔষধ দাও, আমাকে বাঁচাও।”
ডড্লে ব্যগ্রভাবে বলিলেন, “ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন একথা শুনিয়া কি বলিল?”
পাচক বলিল, “ষ্টুয়ার্ডের কথা শুনিয়া ডাক্তারের মাথায় যেন বজ্রাঘাত