পাতা:নাবিক-বধূ.djvu/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম পরিচ্ছেদ
১০৯

কোথায় পাইতাম? আমার সঙ্গে যে পিস্তল ছিল, আমেদ বেন্ তাহা কাড়িয়া লইয়াছে। তোমার নিকট চিরকৃতজ্ঞ রহিলাম। আমার ব্যাঙ্কারকে চিঠি লিখিয়া দিই, তোমার লণ্ডনের ঠিকানাটা আমাকে বল।”

 পাচক মিঃ ডড্‌লেকে আর একখানি কাগজ দিল। ডড লে পত্র লিখিয়া তাঁহার লণ্ডনস্থ ব্যাঙ্কারকে জ্ঞাপন করিলেন, এই পত্রবাহককে তাঁহার গচ্ছিত অর্থ হইতে যেন হাজার পাউণ্ড প্রদান করা হয়। তিনি পত্রখানি লেফাপায় মুড়িয়া পাচকের হস্তে প্রদান করিলেন।

 এই অল্পবেতনভোগী পাচক হাজার পাউণ্ড—পনের হাজার টাকা জীবনে কখন একত্র দেখে নাই, সমস্ত জীবন চাকরী করিয়া তাহার এত টাকা সঞ্চয় করিবার আশা ছিল না। পত্রখানি পাঠ করিয়া আনন্দে, উৎসাহে, কৃতজ্ঞতায় তাহার হৃদয় পূর্ণ হইল, সে বলিল, “ধন্যবাদ মহাশয়। আমি জীবনে কখন এতগুলি টাকা একত্র দেখি নাই। না, ইহার সিকি টাকাও নহে। পরমেশ্বয়ের নিকট প্রার্থনা করি আপনারা নির্বিঘ্নে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় লাভ করুন। আমার এই কার্ডখানি রাখুন, ইহাতেই আমার লণ্ডনের ঠিকানা লেখা আছে। আপনারা নিরাপদে আশ্রয় পাইয়াছেন কি না দয়া করিয়া আমাকে জানাইবেন। আপনার সংবাদ না পাইলে আমার দুশ্চিন্তা দূর হইবে না।”

 ডড্‌লে বলিলেন, “সে খবর তুমি নিশ্চয়ই পাইবে। চল, এখন বোটখানির সন্ধানে যাই।—কেহ আমাদিগকে দেখিতে না পাইলেই বাঁচি।—রাত্রিও অনেক হইয়াছে। এখন সময় কত?”

 পাচক ঘড়ি খুলিয়া বলিল, “বারটা বাজিতে বিলম্ব নাই।”

 ডড্‌লে বলিলেন, “পাহারা বদল না-হওয়া পর্য্যন্ত আমাদিগকে অপেক্ষা করিতে হইবে।—সকলে ঘুমাইলে আমরা নিঃশব্দে কায আরম্ভ করিব।”

 কথা শেষ হইতে-না-হইতে জাহাজের ঘণ্টায় ঢং ঢং করিয়া বারটা বাজিয়া গেল। প্রায় পাঁচ মিনিট পরে জাহাজের প্রধান কর্ম্মচারী ও মেট্ শয়ন করিতে চলিল। তাহারা স্ব-স্ব কামরায় প্রবেশ করিয়া দ্বার রুদ্ধ করিলে ডড্‌লে পাচকের সঙ্গে তাহার কেবিন হইতে বাহির