ডড্লে ডেকে রেলিংএ উঠিয়া দড়ি ধরিয়া বুলিয়া পড়িবেন, ঠিক সেই মুহূর্ত্তে পাচক ব্লেক সভয়ে অস্ফুট আর্ত্তনাদ করিয়া উঠিল।—তাহা শুনিয়া ডড্লে ঘুরিয়া-দাঁড়াইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ব্যাপার কি?—কি হইয়াছে?”
কিন্তু পাচক কোন কথা বলিবার পূর্ব্বেই একটি মনুষ্যমুর্তি তীরবেগে, তাঁহার দিকে দৌড়াইয়া আসিল।—সে নিকটে আসিবামাত্র তিনি চিনিলেন, সে খালাসী টম্কিন্স।
টম্কিন্সকে দেখিয়া ডড্লে মুহূর্ত্তের জন্য কিংকর্তব্যবিমুঢ় হইলেন; তাঁহার মনে হইল, তিনি আর ইতস্ততঃ না করিয়া সেই মুহূর্ত্তেই বোটে নামিয়া বোটখানি সমুদ্রে ভাসাইয়া দিবেন। কিন্তু তাহাতে কোন লাভ নাই তাহাও তিনি বুঝিলেন, জাহাজের সকল লোক মুহূর্ত্তে তাঁহাদের পলায়নের কথা জানিতে পারিবে,তখন ধরা পড়িতে বিলম্ব হইবে না। ডড্লে তৎক্ষণাৎ ডেকে নামিয়া টম্কিন্সের সম্মুখীন হইলেন।
টম্কিন্স তাঁহাকে দেখিয়া দাঁত বাহির করিয়া শ্লেষভরে বলিল, “কি খবর? পলাইবার চেষ্টা হইতেছে! তুমি আরব হও আর যাহাই হও, আমার চোখে ধূলি দিয়া পলাইতে পারিবে না।”
টম্কিন্স চীৎকার করিয়া লোক ডাকিবার উপক্রম করিতেই ডড্লে তাহার কণ্ঠদেশ বামহস্তে দৃঢ়রূপে চাপিয়া ধরিয়া দক্ষিণ হস্তে তাহার মস্তকে এমন জোরে মুষ্ট্যাঘাত করিলেন যে, টম্কিন্সের মগজ পর্যন্ত নড়িয়া গেল।—সে আর চীৎকার করিবার অবকাশ পাইল না। সেই অবসরে তিনি তাহাকে ডেকের উপর চিৎ করিয়া ফেলিয়া পাচক ব্লেককে বলিলেন, “শীঘ্র একগাছি দড়ি দাও, উহার হাত পা বাঁধিয়া ফেলি, হঠাৎ উঠিতে না পারে। উহার চেতনা-সঞ্চার হইলেই চীৎকার করিবে,একখানা রুমাল দাও, উহার মুখে দিয়া চীৎকারের পথ বন্ধ করি।”
ব্লেক দড়ি ও রুমাল বাহির করিয়া দিল। ডড্লে টম্কিন্সেরে হাত-পা বাঁধিয়া ও তাহার মুখে রুমাল গুঁজিয়া তাহাকে ফেলিয়া রাখিয়া বলিলেন, “ব্লেক, আর দেখ কি? তুমিও আমাদের সঙ্গে চল। এই খালাসীটা চেতনালাভ