পাতা:নাবিক-বধূ.djvu/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ
১১৯

 অগত্যা পাচকও খানিক মাংস বাহির করিয়া লইয়া খাইতে বসিল। ডড্‌লে একহাতে বোটের হাল ধরিয়া অন্য হাতে আহার করিতে লাগিলেন। বোটের হাল ছাডিবার কোন উপায় ছিল না, কারণ তখন বায়ুবেগ অপেক্ষাকৃত প্রবল হওয়ায় বোটখানি তরঙ্গরাশির উপর দিয়া হেলিয়া-দুলিয়া অতি দ্রুতবেগে অগ্রসর হইতেছিল। মিস্ এরস্‌কাইন অধিক কিছু খাইতে পারিলেন না। যাহা হউক, আহার শেষ হইলে ডড লে মিস এরস্‌কাইনের শালখানির ভাঁজ খুলিয়া তদ্বারা তাঁহার সর্ব্বশরীর ঢাকিয়া দিলেন।

 ডড্‌লে মিস্ এরস্‌কাইনকে জিজ্ঞাসা করিলেন,”ঠাণ্ডা বাতাসে আপনার শীত লাগিতেছে কি?”

 মিস্ এরস্‌কাইন বলিলেন, “না, একটুও শীত লাগিতেছে না। আমার বেশ আরাম বোধ হইতেছে। আমার মনের ভার অনেকটা হাল্কা হইয়া গিয়াছে, বিশেষতঃ মামাকে যে নরহত্যা-পাতকে লিপ্ত হইতে হয় নাই, ইহাই আমার সর্ব্বাপেক্ষা অধিক সুখের কথা।”

 ডড্‌লে বলিলেন, “আপনার কথা শুনিয়া একটা কথা মনে পড়িল। আশা করি আপনি আমার কৌতুহল দূর করিবেন।—আপনি আপনার কেবিন হইতে ডেকে আসিবার পূর্ব্বে আপনার মামা কি আপনার কেবিনে গিয়াছিল?”

 মিস্ এরস্‌কাইন বলিলেন, “হাঁ, মামা আমার কামরায় গিয়াছিল বলিয়াই ত আমার বাহিরে আসিতে বিলম্ব হইয়াছিল। তাহার সম্মুখ দিয়া কি করিয়া আসি? রাত্রি নয়টার সময় মামা আমার কুঠুরীতে গিয়া আমাকে বলে, রাত্রি বারটার সময় আবার আসিবে। মামার কথা শুনিয়াই ত আমার চক্ষু স্থির। আমি বুঝিলাম, অদূরে কোন গুপ্তস্থানে আপনি আমার প্রতীক্ষায় দাঁড়াইয়া আছেন, আমার বিলম্ব দেখিয়া আপনি ছট্‌ফট্ করিতেছেন, কিন্তু উপায় কি? সে সময় আমার মনের অবস্থা কিরূপ হইয়াছিল, তাহা আপনাকে বুঝাইতে পারিব না। সে কথা চিরজীবন আমার মনে থাকিবে। মামা আমার কামরায় ঢুকিয়া কি করিল—জানেন? সে আমার খাটের উপর ঝুঁকিয়া পড়িয়া আমার মুখের দিকে কট্-মট্ করিয়া চাহিতে লাগিল। দেখিলাম—তাহার সর্ব্বশরীর: