ডড্লে সে কথায় কর্ণপাত না করিয়া পাচকের সাহায্যে বোটের খোলের মধ্যে কম্বল বিছাইয়া তাঁহার জন্য বিছানা করিয়া দিলেন।
মিস্ এরস্কাইন বলিলেন, “আপনি আমার সুখ-স্বচ্ছন্দতার জন্য কত কষ্টই না করিতেছেন।—আমি আপনাদের কোনও রকম সাহায্য করিতে পারিলে কৃতার্থ হইব।”
ডড লে মিস্ এরস্কাইনকে সেই শয্যায় শয়ন করাইয়া বলিলেন, “আপনাকে নানা প্রকার অসুবিধা সহ্য করিতে হইতেছে।—আপনি প্রফুল্ল চিত্তে এই সকল অসুবিধা সহ্য করিলেই আমরা আপনার নিকট যথেষ্ট সাহায্য পাইলাম মনে করিব।”
অনন্তর ডড্লে পাচককে বলিলেন, “ব্লেক, তুমি আর বসিয়া থাকিয়া কষ্ট পাও কেন? অত্যন্ত পরিশ্রান্ত হইয়াছ গলুইয়ে মাথা রাখিয়া ঐখানেই শুইয়া পড়। সমুদ্রের দিকে দৃষ্টি রাখিও, যদি হঠাৎ কোন দিকে জাহাজ দেখিতে পাও, তৎক্ষণাৎ আমাকে সে কথা জানাইও। কেমন, পারিবে ত?”
পাচক বলিল, “এ কায আমি খুব পারিব, কিন্তু আপনিও একটু বিশ্রাম করিয়া লইলে ভাল হয়। ততক্ষণ আমি আপনার হাল ধরিয়া থাকিতাম।”
ডড্লে বলিলেন, “তুমি সে জন্য চিন্তিত হইও না, আমি ক্লান্ত হইলে তোমার হাতে হাল ছাড়িয়া দিয়া বিশ্রাম করিব।—ঘুম আসিলে একটু ঘুমাইয়া লইও। আজ তুমি আমাদের যে উপকার করিয়াছ—তাহা আমরাই জানি।”
পাচক বলিল, “ও কথা কেন বলেন আমি আপনাদের সঙ্গে না আসিতে আমারই কি মঙ্গল হইত?”
পাচক গলুয়ে মাথা রাখিয়া শয়ন করিল। সে সমুদ্রের দিকে চাহিয়া, কোন জাহাজ সে দিকে আসিতেছে কি না তাহাই দেখিতে লাগিল, শীঘ্রই নিদ্রাভিভূত হইল। মিস্ এরস্কাইনও বোটের খোলে পড়িয়া ঘুমাইতে লাগিলেন। কেবল মিঃ ডড্লে ধ্রুব-নক্ষত্রের দিকে দৃষ্টি রাখিয়া সেই গভীর রাত্রে চন্দ্রালোক-প্লাবিত মহাসমুদ্রে নৌ-পরিচালিত করিতে লাগিলেন। মধ্যে মধ্যে খণ্ড-বিখণ্ড মেঘ স্তরে-স্তরে নীলাকাশে ভাসিয়া যাইতেছিল, এবং সেই