পাতা:নাবিক-বধূ.djvu/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৪
নাবিক-বধূ

 মিস্ এরসকাইন বলিলেন, “ইহাতে আর আপত্তি কি? বিপদের সময় সকলই করিতে হয়। আপনি লোকটাকে না পাঠাইলেই ভাল হইত, বেচারা অনর্থক হয়রাণ হইয়া আসিল।”

 মিস্ এরসকাইন সেই কুটীরে প্রবেশ করিয়া মৃত্তিকায় তাহার কম্বল প্রসারিত করিলেন।—ডড়লে পাচককে একাকী পাইয়া নিম্নস্বরে বলিলেন, “ব্লেক, তোমার ভাব দেখিয়া বোধ হইতেছে, আমাকে তোমার কিছু বলিবার আছে। তোমার এত বিলম্ব হইবার কারণ কি? কি জন্যই-বা নৌকার পালখানি আনিলে না?—আমার বড় ভয় হইয়াছে, ব্যাপার কি বল।”

 ব্লেক বলিল, “আপনি ঐদিকে চলুন, মিস্ এরসকাইন কে সে সকল কথা জানিতে দেওয়া হইবে না। তিনি ভয় পাইবেন। ব্যাপার বড় গুরুতর। এতই গুরুতর যে, তাহা শুনিল আপনি হতবুদ্ধি হইয়া যাইবেন। আমার ত মহাশয়, বুদ্ধি লোপ পাইয়াছে।”

 ডড্‌লে পাচকের হাত ধরিয়া তাঁহাকে কয়েক গজ দূরে টানিয়া লইয়া গিয়া উদ্বেগকম্পিত স্বরে বললেন, এবার কি কে? শীঘ্র বল।”

 পাচক বলিল, “ব্যাপার অতি সাংঘাতিক।—ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন ও জাহাজের কাপ্তেন আমাদের অনুসরণ করিয়াছিল, আমাদের ধরিতে তাহারা এখানে পর্যন্ত আসিয়া পড়িয়াছে।

 কথাটা শুনিয়া ডডলির হৃৎকম্প হইল; তিনি অস্ফুটস্বরে বলিলেন, “সকল কথা খুলিয়া বল। তাহারা এখানে আসিয়াছে—ইহা কিরূপে জানিলে?”

 পাচক বলিল, “আমি এই দ্বীপের অদূরে জাহাজখানা দেখিয়া আসিয়াছি। —জাহাজ যেখানে নোঙ্গর করিয়াছে, সে স্থান এখান হইতে পাঁচ মাইলের অধিক দূরে নহে। আমি বোটের সন্ধানে পাহাড়ের উপর-দিয়া; সমুদ্রকুলের দিকে যাইতেছিলাম, হঠাৎ দেখিলাম, একখান জাহাজ আসিয়া দ্বীপের নিকট ভিড়িল।’ আমি জাহাজখানি দেখিয়াই চিনিতে পারিলাম। সে যে কেন আসিয়াছে— তাহাও বুঝিতে পারিলাম। আমার আর অগ্রসর হইতে সাহস হইল না। অতঃপর কি হয়—তাহা দেখিবার জন্য আমি সেই স্থানে দাঁড়াইয়া রহিলাম।