কয়েক মিনিট পরে দেখিলাম, জাহাজখানি নোঙ্গর করিয়া একখানি বোট জলে নামাইয়া দিল। বুঝিলাম, ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন ও কাপ্তেন সেই বোটে আমাদের খুজিতে আসিতেছে। —কিন্তু আমি হতাশ হই নাই, উহারা যদি এই দ্বীপের কোন অধিবাসীর সাক্ষাৎ পায়, তাহা হইলেও তাহার নিকট আমাদের কোন সন্ধান জানিতে পারিবে না। আমরা যে এখানে আছি তাহা ত কেহই জানে না। সুতরাং উহার নিশ্চয়ই জাহাজে ফিরিয়া গিয়া নোঙ্গর তুলিবে, এবং আমাদের সন্ধানে অন্যদিকে যাইবে, তাহা হইলে আর আমাদের ভয় কি?
ডড্লে বলিলেন, “সে কথা সত্য কিন্তু জানে এখনও কি সেইখানে নোঙ্গর করিয়া আছে?
পাচক বলিল, “আছে বৈ কি।—ব্যাপার যাহা ঘটিয়াছে তাহা আরও জাহাজের বোটখানি দ্বীপের কিনারায় আসিলে দেখিলাম—ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন ও জাহাজের কাপ্তেন সেই বোট হইতে তীরে নামিল। অতঃপর কি কর্তব্য তাহাই ভাবিতেছি, এমন সময় এই দ্বীপের কয়েকজন লোককে জঙ্গলের ভিতর দিয়া সমুদ্রকূলের দিকে যাইতে দেখিলাম।——তাহাদের দুই তিন জনের মাথায় এক-একটা ঝোডা। তাহার। অন্যদিক দিয়া সমুদ্রের ধারে উপস্থিত হইল, সেই স্থানেই আমাদের বোটখানি বাধা ছিল। বোটখানি দেখিয়া তাহারা যেন কি বলাবলি করিল, তাহার পর আমাদের বোটে উঠিয়া বোটের মাস্তুল খাটাইয়া তাহাতে পাল তুলিয়া দিল এবং দাঁড় টানিতে-টানিতে তাহারা বোটখানি লইয়া চলিল। আমার ইচ্ছা হইল আমি দৌড়াইয়া সমুদ্রকূলে উপস্থিত হইয়া তাহাদিগকে বোটখানি চুরী করিয়া লইয়া যাইতে নিষেধ করি, —কিন্তু পরমুহূর্তেই মনে হইল, তাহাদিগকে দেখা দেওয়া ভাল হইবে না, তাহারা আমাকে দেখিলেই সেকথা কাপ্তেনের কাছে প্রকাশ করিবে। যাহা হউক, তাহাৱা বোটখানি লইয়া জাহাজের দিকে চলিল,—আমিও আপনার নিকট ফিরিয়া আসিলাম।”
পাচকের কথা শুনিয়া ডড়লের মুখ অন্ধকারাচ্ছন্ন হইল। অতঃপর তিনি