কি করিবেন, তা সহসা স্থির করিতে পারিলেন না। ল্যাম্পিয়ন মিস এরসকাইনকে হত্যা করিবার জন্য কাপ্তেনের সহিত যে ষড়যন্ত্র করিয়াছিল— তাহ ডড়লে জানিতে পারিয়াছেন, একথা ল্যাম্পিয়ন ও কাপ্তেন উভয়েই বুঝিতে পারিয়াছে, সুতরাং কথাটা গোপন রাখিবার উদ্দেশ্যে তাহার যে তাহাদিগকে ধরিবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করিবে, এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই। একবার যদি তাহারা তাহাদিগকে ধরিতে পারে, তাহা হইলে তাহাদের প্রাণরক্ষার আশা নাই। তারা দ্বীপে আসিয়া তাহাদের অন্বেষণ করিতেছে, রাত্রিকালে ধরা না পড়িলেও পরদিন তাহাদিগকে ধরা পড়িতেই হইবে। —এখন কর্তব্য কি?
ডড়লে অস্ফুট স্বরে বলিলেন, “এখন আমি করি কি? নেটিভগুলা আমাদের বোটখানি লইয়া চলিয়া গিয়াছে। কাপ্তেনের সহিত তাহাদেব নিশ্চয়ই দেখা হইবে, এবং বোটের কথা তাহাকে জানাইলেই কাপ্তেন ও ল্যাম্পিয়ন বুঝিবে আমরা এই দ্বীপেই আশ্রয় লইয়াছি।—তখন আমাদিগকে খুঁজিয়া বাহির করা তাহাদের পক্ষে কঠিন হইবে না। এখানে ধরা পড়িলে আমাদের প্রাণরক্ষার কোন আশা নাই। বোটখানি থাকিলেও এই রাত্রে স্থানান্তরে পলায়নের চেষ্টা করিতাম,—কিন্তু নেটিভগুলা বোটখানি লইয়া গিয়াছে। এই ক্ষুদ্র দ্বীপে সম্পূর্ণ নিরাশ্রয়ভাবে কয় দিন লুকাইয়া থাকিব?”
ডড্লের অভিপ্রায় জানিবার জন্য পাচক উদ্বেগপূর্ণ দৃষ্টিতে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল।——ডড়লে তাহাকে বলিলেন, “তুমি যে মিস্ এরসকাইনের সাক্ষাতে আমাকে এ সকল কথা বল নাই, ইহা খুব বুদ্ধিমানের কায হইয়াছে। তিনি এ সকল কথা শুনিলে অত্যন্ত ভয় পাইতেন, অথচ ইহাতে তাহার কোন উপকার হইত না।”
পাচক বলিল, “সেটুকু বুদ্ধি আমার আছে। মিস এরসকাইন একেই ত অত্যন্ত বিপন্ন, তাহার উপর এ সকল কথা শুনিলে কি তিনি ধৈর্য্যধারণ করিতে পারিতেন? না মহাশয়, প্রাণ গেলেও আমি এ সকল গোপনীয় কথা তাঁহার নিকট প্রকাশ করিব না।