ডড্লে বলিলেন, “সে বিশ্বাস আমার আছে। তুমি আমাদের বিপদের বন্ধু। আমরা বিপন্ন হইয়াছি, বিপদের মেঘ আমাদের মাথার উপর ঘনাইয়া আসিয়াছে; যে-কোন মুহূর্তে আমাদের মস্তকে বজ্রাঘাত হইতে পারে বটে, কিন্তু আমি এখনও হতাশ হই নাই। আশা আছে পরমেশ্বরের আশীর্বাদে এই ভীষণ বিপদ হইতে আমরা উদ্ধার লাভ করিতে পারি। অতঃপর আমাদের কি করা কর্তব্য, তারই আলোচনা করা যাউক।—এই দ্বীপের কোন দিকে লোকালয় আছে—তাহার কোন সন্ধান পাইয়াছ কি?”
পাচক বলিল, “আমার অনুমান দ্বীপের পশ্চিমাংশে গ্রাম আছে। জাহাজখানি সেই দিকে নোঙ্গর করিয়াছে বলিয়াই এরূপ অনুমান করিতেছি।
ডড্লে বলিলেন, “তোমার অনুমান সত্য হওয়াই সম্ভব। এখন কথা এই যে, আমরা আপাতত এখানেই লুকাইয়া থাকিব, না—এই দ্বীপের প্রধান ব্যক্তির সহিত সাক্ষাৎ করিয়া অর্থদানে তাহাকে বশীভূত করিবার চেষ্টা করিব?—সে আমাদিগকে আশ্রয় দান করিলে কাপ্তেন বা ল্যাম্পিয়ন আমাদের কোন অনিষ্ট করিতে পারিবে না। স্বীকার করি ল্যাম্পিয়নও তাহাকে উৎকোচ, দানে হস্তগত করিবার চেষ্টা করিবে, কিন্তু সে যে অধিক টাকা দিতে পারিবে, এরূপ বোধ হয় না। আমরা প্রাণরক্ষার জন্য তাহাকে অনেক অধিক অর্থ প্রদানের লোত দেখাইলে সর্দার আমাদেরই পক্ষাবলম্বন করিবে। সে যদি আমাদিগকে মোম্বাসা বা জাঞ্জিবারে রাখিয়া আসিতে সম্মত হয়—তাহা হইলে আমি তাহাকে আশাতিরিক্ত পুরস্কার দিব।—আমার প্রস্তাবে কি সে সম্মত হইবে না? একটা অসভ্য নেটিভকে বশ করা কি এতই কঠিন? তুমি কি বল?”
পাচক বলিল, “আপনার এই প্রস্তাবই যুক্তিসঙ্গত বোধ হইতেছে।কিন্তু আপনি কি সেই নেটিভটার সঙ্গে কথা কহিতে পারিবেন?—তাহার ভাষা বুঝিতে পারিবেন?
ডড্লে বলিলেন, “চেষ্টা করিয়া দেখিব। পূর্ব্ব-আফ্রিকার বহু দেশেই ঘুরিয়াছি, সেই নেটিভ সর্দারটা আরবই হউক, আর হাবসীই হউক-তাহার কথা বুঝিতে পারি, —আমার মনের ভাবও তাহাকে বুঝাইতে পারিব।