পাতা:নাবিক-বধূ.djvu/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
১৫৫

শত গিনি বকশিশ দিবেন। —কিন্তু আজ রাত্রে আপনার শত্রুরা জাহাজ হইতে নামিয়া উহার সহিত দেখা করিতে গিয়াছিল। ভাই আপনাদিগকে তাহাদের হস্তে সমর্পণ না করায় তাহারা রাগিয়া আগুন হইয়াছে। আমার ভাইয়ের একটি ছেলে আছে, তাহারা তাহাকে জাহাজে ধরিয়া লইয়া গিয়াছে, বলিয়া গিয়াছে— আপনাদের ধরিয়া দিতে না পারিলে তাহারা কাল তাহাকে গুলি করিয়া মারবে—এ কথা শুনিয়া মঙ্গহোবো অত্যন্ত ভীত হইয়াছে। টাকা বড় না ছেলে বড়?—টাকার লোভে সে তাহার ছেলেটির প্রাণের আশা ত্যাগ করিতে পারিবে না, এই জন্য সে স্থির করিয়াছে, কাল আপনাদিগকে আপনাদের শত্রুহতে সমর্পণ করিবে।—আমি তাহাদের পরামর্শ শুনিয়াছি। আপনাদিগকে লামুতে লইয়া যাইবার ছলে নৌকায় তুলিবে কিন্তু লামুর দিকে না গিয়া অদূরবর্তী আর একটা দ্বীপে উপস্থিত হইবে। আপনার শত্রুরা জাহাজ লইয়া সেখানে লুকাইয়া থাকিবে, আপনারা সেখানে যাইবামাত্র—বুঝিয়াছেন?”

 আগন্তুকের কথা শুনিয়া ডড্‌লের সর্বাঙ্গ ঘর্মাক্ত হইয়া উঠিল। তিনি যে কি বলিবেন, কি করিবেন তাহা স্থির করিতে পারিলেন না। তবে বুঝি লেন, কথাটা সতা হইতে পারে, পাঁচশত গিনি বকশিশের লোভেই এই লোকটা তাঁহাদের সাহায্যের প্রস্তাব করিতে আসিয়াছে। কিন্তু ইহার কথা কি সত্য? ইহাকে কি বিশ্বাস করা যায়?

 এই সকল কথা চিন্তা করিয়া ডড়লে বলিলেন, “তোমার সকল কথা শুনিলাম। তোমার কথাগুলি অসঙ্গত নহে, কিন্তু তুমি কি আমাদের সাহায্য করিতে পারিবে? আমাদিগকে লামুতে রাখিয়া আসিতে পারিবে? যদি পার—তাহা হইলে তোমার ভাইকে যে পাঁচশত গিনি দিতে চাহিয়াছি, তুমিই তাহা পাইবে। যে বিশ্বাসঘাতকতা করিবে—সে টাকা পাইবে না, অধিকন্তু আমাদের রাণীর জাহাজ আসিয়া তোপে তাহার ঘর-বাড়ী উড়াইয়া দিবে, আখা-বাচ্চা একগড করিবে।”

 আগন্তুক বলিল, “আমি নিমকহারাম নহি, সচ্চা লোক। তোমাদের অসহায় অবস্থা দেখিয়া আমার বড় দয়া হইয়াছে, আমার খুব দয়ার শরীর;