ল্যাম্পিয়ন অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী ছিল, নিজের শক্তি-সামর্থ্যের উপর তাহার অসাধারণ বিশ্বাস ছিল। নিজেকে অন্য সকলের অপেক্ষা বুদ্ধিমান মনে করিয়া সময়ে সময়ে তাহাকে বিপন্ন হইতেও হইত। লোকটি সুবক্তা ও বাগ্মী ছিল, সাধারণের নেতৃত্ব করিবার শক্তিও অল্প ছিল না। শত্রুপক্ষ তাহার বিদ্রুপ কশাঘাতে জর্জরিত হইত। কেহ তাহাকে সহজে ঘাটাইতে চাহিত না। অসাবহৃদয় হুজুগপ্রিয় রমণী-সমাজেই তাহার বিশেষ প্রতিপত্তি ছিল, সেই শ্রেণীর পুরুষেরাও তাহার পক্ষপাতী ছিল। কিন্তু অনেকেই তাহাকে কপট বলিয়া ঘৃণা করিত। লোকটি দীর্ঘাকৃতি, মস্তকের সম্মুখভাগে টাক, প্রশস্ত ললাট, খজোর ন্যায় উন্নত নাসিকা,দাড়ি নাই, গোঁফজোড়াটা অতান্ত জমকালো। তার পোষাক-পরিচ্ছদেরও যথেষ্ট পারিপাট্য ছিল। বস্তুতঃ এরূপ সৌখিন লোক সে অঞ্চলে অধিক ছিল না। লোকের প্রশংসালাভের জন্য ডাক্তার বেশ ভূষায় বিস্তর অর্থব্যয় করিত।
যাহা হউক, এখন আমরা আলোচ্য বিষয়ের অবতারণা করি।
ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন আহার শেষ করিয়া কাগজখানি পাঠ করিল, তাহার পর হাই তুলিয়া কাগজখানি মেঝের উপর নিক্ষেপ করিল, এবং ডডলর মুখের দিকে চাহিয়া বলিল, “আপনি শীঘ্রই দেশান্তরে যাইতেছেন? আপনার সৌভাগ্য দেখিয়া হিংসা হয়। কিন্তু বোধ হয় আপনি ইংলণ্ডে যাইতে পারিলে অধিকতর সুখী হইতেন।”
ডড্লে যে রাজকার্য্যে দেশান্তরে যাইতেছেন—একথা বাহিরের কোন লোক জানিত না, সুতরাং ডাক্তার ল্যাম্পিয়নের কথা শুনিয়া তিনি অত্যন্ত বিস্মিত হইলেন। ডাক্তার হঠাৎ কেন এই প্রসঙ্গের অবতারণা করিল—তাহাও তিনি বুঝিতে পারিলেন না। শেষে তাহার মনে হইল, তিনি পূর্বদিন নাচের মজলিসের বাহিরে মিস্ এরাইনকে তাহার বিদেশ যাত্রার কথা বলিতেছিলেন, সেই সময় ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন তাহার তাগিনেয়ীর অদূরে দাঁড়াইয়া, ছিল, সম্ভবতঃ ডাক্তার তাহার কথা শুনিতে পাইয়াছিল।
ডড্লে ক্ষণকাল নিস্তব্ধ থাকিয়া উত্তর দিলেন, “এক বৎসর বা দেড় বৎসর