নিগ্রো মিঃ স্পরফিল্ডকে অভিবাদন করিয়া প্রস্থান করিলে মিঃ স্পরফিল্ড ডড্লেকে বলিলেন, “তুমি স্বেচ্ছায় যে কার্য্যের ভার লইয়াছ, আমি তাহা লইতে কখন সাহস করিতাম না। সুখের বিষয়, তোমার জন্য সংসারে কেহ শোক করিবার নাই, তোমার উপর নির্ভর করিতেও কেহ নাই। যদি তোমার স্ত্রী-পুত্রাদি থাকিত, তা হইলে এরূপ সঙ্কটজনক কার্য্যে প্রবৃত্ত হইতে সাহস করা সঙ্গত হইত না।—রাত্রি হইয়াছে, এখন শয়ন কর, পরের চিন্তা পরে করিও।”
মিঃ স্পরফিল্ড ডড্লেকে একটি শয়নকক্ষে লইয়া চলিলেন। মিঃ স্পরফিল্ড তাঁহার নিকট বিদায় লইলে তিনি শয়ন করিয়া নানা কথা চিন্তা করিতে লাগিলেন, জুয়ার আড্ডায় ডাক্তার ল্যাম্পিয়নেব যে সকল কথা শ্রবণ করিয়াছিলেন, তাঁহার এই অভিযানের সহিত তাহার কোন সম্বন্ধ আছে কি না তাহা তিনি বুঝিয়া উঠিতে পারিলেন না। ক্রমে মিস্ এরস্কাইনের মোহিনীমূর্ত্তি তাঁহার চিত্রপটে সমুদ্ভাসিত হইয়া উঠিল, কিন্তু চিন্তার বিরাম কোথায়? অবশেষে তিনি বিরক্ত হইয়া দীপ নির্ব্বাপিত করিয়া মশারি ফেলিলেন।
কতক্ষণ তিনি ঘুমাইয়াছিলেন বলা যায় না, হঠাৎ নিদ্রাভঙ্গে তাঁহার বোধ হইল—কে তাঁহার মশারির ভিতর প্রবেশ করিয়া তাঁহার কণ্ঠ স্পর্শ করিতেছে। তিনি তৎক্ষণাৎ লাফাইয়া উঠিয়া উভয় হাতে তাহাকে আক্রমণ করিলেন। তখন তাঁহার আততায়ী তাঁহার বক্ষস্থল লক্ষ্য করিয়া ছুরিকা প্রয়োগ করিল। কিন্তু অন্ধকারে ছুরিকাখানি লক্ষ্যভ্রষ্ট হইল। মুহূর্ত্তমধ্যে ডড্লে তাঁহার আততায়ীকে চীৎ করিয়া ফেলিয়া তাহার বুকে বসিলেন, এবং তাহার হাত হইতে ছোরাখানি কাড়িয়া লইয়া তাহার কণ্ঠরোধের চেষ্টা করিতে লাগিলেন। দুইজনে ধস্তাধ্বস্তি আরম্ভ হইল, শেষে উভয়েই খাটের উপর হইতে মেঝের উপর পড়িয়া লুটাপুটি ও ঝটাপটি। ডড্লের আততায়ী যে-ই হউক, লোকটি যে দীর্ঘদেহ, বলবান ও হৃষ্টপুষ্ট, তাহা তিনি বুঝিতে পারিলেন। কিন্তু ডড্লে কাপুরুষ ছিলেন না, তাঁহার দেহেও অসুরের মত বল ছিল, তাহার উপর তিনি ব্যায়ামে সুদক্ষ ছিলেন। উভয়ে প্রাণপণে যুদ্ধ করিলেও তাহাতে কোন