নিবেদন
‘রহস্য-লহরী’ উপন্যাসমালার পঞ্চবিংশতি উপন্যাস ‘নাবিক-বধূ’ প্রকাশিত হইল। এই উপন্যাসখানি প্রকাশে অন্যায় বিলম্ব হওয়ায় আমরা ‘রহস্য-লহরী’র সদাশয় গ্রাহক ও পাঠক মহোদয়গণের নিকট অত্যন্ত অপরাধী হইয়াছি, এবং এই ত্রুটির জন্য কৃতাঞ্জলিপুটে তাঁহাদের নিকট মার্জ্জনা ভিক্ষা করিতেছি। যথাসময়ে উপযুক্ত পরিমাণ কাগজ সংগ্রহে অসামর্থ্য এই বিলম্বের একটি কারণ হইলেও, ইহার প্রধান কারণ—নানা প্রকার ব্যয়ভারে প্রপীড়িত হওয়ায় আমাদিগকে অত্যন্ত বিপন্ন হইতে হইয়াছিল। আমরা এখনও এই বিপদ হইতে মুক্তিলাভ করিতে পারি নাই, সুতরাং নানা ঝঞ্চাটে বিব্রত হইয়াও আমরা যে ‘রহস্য-লহরী’র বর্ত্তমান খণ্ড প্রকাশে সমর্থ হইলাম, ইহাই আমাদের পরম সৌভাগ্য মনে করিতেছি।
এবার মহাপূজা উপলক্ষে ‘রহস্য-লহরী’র যে খণ্ড প্রকাশিত হইবে, তাহাতে কোন বৈদেশিক আখ্যায়িকা থাকিবে না। বাঙ্গালীর এই জাতীয় মহোৎসবকালে আমাদের পল্লী-জীবনের সুখদুঃখের ও হর্ষ-বিষাদের কতকগুলি চিত্রই এই গ্রন্থের প্রতিপাদ্য বিষয় হইবে। অবজ্ঞাত ও উপেক্ষিত পল্লীজীবনের এই সকল মর্ম্মস্পর্শী মৌলিক কাহিনী-বঙ্গসাহিত্যে সংরক্ষিত হইবার যোগ্য, শিক্ষিত বঙ্গবাদিগণের মধ্যে এ বিষয়ে মতভেদের সম্ভাবনা নাই, সে সম্ভাবনা থাকিলে ‘পল্লীচিত্র’ ও ‘পল্লীবৈচিত্র্য’ বঙ্গীয় পাঠক সমাজে আশাতীত সমাদর লাভে সমর্থ হইত না।
যাহারা পল্লী-সমাজের মেরুদণ্ড, তাহাদের দৈনন্দিন জীবনের আলেখ্য ‘পল্লী-কথা’য় প্রকাশিত হইতেছে বটে, কিন্তু যদি এই আলেখ্যাঙ্কণে কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়,তবে তাহা আমাদেরই অঙ্কণ নৈপুণ্যের অভাবশতঃ হইয়াছে, ইহাই মনে করিতে হইবে। তথাপি আমাদের সুখ-দুঃখের ও হর্ষ-বিষাদের চিত্র