পঞ্চম পরিচ্ছেদ
মিঃ ডড্লে তাঁহার সামরিক পরিচ্ছদ কেপ টাউনে তাঁহার জাহাজে রাখিয়া আসিয়াছিলেন, তাঁহার সাধারণ পরিচ্ছদও মোজাম্বিকে কন্সলের বাড়ীতে তাঁহার ব্যাগের ভিতর আবদ্ধ ছিল। তিনি ছদ্মবেশে মাজাজিমা উপসাগরের কুলে আসিয়া দাঁড়াইলেন, তখন তাঁহাকে ইংরাজ বলিয়া কাহারও চিনিবার সাধ্য ছিল না। তাঁহার দেহে ফকিরের পরিচ্ছদ, তাঁহার সর্ব্বাঙ্গ কৃষ্ণবর্ণ। —তিনি উন্মত্ত ফকির সাজিয়া সমুদ্রকুলে আসিয়া দাঁড়াইলেন, সমুদ্রের অবিরাম জলকল্লোল তাঁহার কর্ণকুহরে প্রবেশ করিতে লাগিল। কোন দিকে অন্য কোন শব্দ নাই, কোন দিকে জনপ্রাণীর সমাগম নাই। ডড্লের বোধ হইল, তিনি আনন্দ ও আলোকপূর্ণ সুখস্মৃতির আগারস্বরূপ পুরাতন জগতের নিকট বিদায় গ্রহণ করিয়া কোনও এক অপরিজ্ঞাত, উদ্বেগ-আতঙ্ক-সমাকুল নূতন জগতের সিংহদ্বারে আসিয়া দণ্ডায়মান হইয়াছেন।—তিনি যতই সাহসী ও ধীর প্রকৃতির লোক হউন, সে সময় তাহার মন যে অত্যন্ত চঞ্চল ও উদ্বিগ্ন হষ্টয়া উঠিয়াছিল—এ কথার উল্লেখ বাহুল্যমাত্র। তাঁহার তখনকার মনের ভাব ভাষায় প্রকাশের চেষ্টা করা বাতুলতা মাত্র। পাগলের অভিনয় করিতে উদ্যত হইয়া তিনি প্রায় পাশলের মতই হইয়াছিলেন,–কিন্তু এই সঙ্কটময় মুহূর্তেও মিস এরস্কাইনের মনোহারিণী মূর্ত্তি তিনি ভুলিতে পারিলেন না, তাঁহার মনে হইল, “মিস এরস্কাইন যদি এ সময় আমাকে দেখিতেন—তাহা হইলে তিনি নিশ্চয়ই আতঙ্কে অভিভূত হইতেন। —যাহা হউক, জলে নামিলে আমার রঙ ধুইয়া যাইবে না-ইহাই আমার সৌভাগ্য, নতুবা বোটে উঠিয়াই আমাকে ধরা পডিতে হইত।”
‘ধাও'খানি প্রায় দুই শত গজ দূরে নোঙ্গর করিয়াছিল। মিঃ ডড্লে এসে ‘ধাও' লক্ষ্য করিয়া জলে সাঁতার দিতে লাগিলেন। তাঁহার ন্যায় সন্তরণ