করিতে লাগিলেন। আমেদ বেনের আদেশানুসারে কতকগুলি খাদ্যদ্রব্য তাঁহার সম্মুখে আনীত হইল, কিন্তু তিনি তৎপ্রতি দৃষ্টিপাতও করিলেন না।—তিনি সামওয়েলির সহিত সাক্ষাতের আশায় কয়েকবার আড়চক্ষে ইতস্ততঃ চাহিলেন, কিন্তু তাহাকে একবারও দেখিতে পাইলেন না। মধ্যাহ্নে একবার মাত্র তিনি তাহাকে দেখিতে পাইয়াছিলেন। সে ছদ্মবেশে থাকিলেও তিনি তাহাকে চিনিতে পারিলেন, কিন্তু যে কারণেই হউক, সে তাঁহার সহিত কথা কহিল না। তাঁহাকে চিনিতে পারিয়াছে এরূপ ভাবও প্রকাশ করিল না। —তিনিও কোনরূপ আগ্রহ প্রকাশ করিলেন না। সায়ংকালে ধাওখানি দীর্ঘপথ অতিক্রম করিয়া পম্বা উপসাগরে প্রবেশ করিল। ইহার দক্ষিণ কূলে ‘নিয়ামাজেজি’ নামক পল্লী। রাত্রির মত সেইস্থানে নোঙ্গর করা হইল। আমেদ বেন্-হাসেন ‘ধাও’ হইতে নামিয়া তীরে উঠিল। সে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ‘ধাও’য়ে ফিরিল না। এই অবসরে মিঃ ডড্লে সামওয়েলির সহিত সাক্ষাতের সুযোগ পাইলেন।—তিনি যেখানে বসিয়াছিলেন, সামওয়েলি ধীরে ধীরে সেই স্থানে আসিয়া দাঁড়াইল।
মিঃ ডড্লে কোরাণের বয়েৎ আবৃত্তি করিতে-করিতে সামওয়েলির মুখের দিকে না চাহিয়াই নিম্নস্বরে বলিলেন, “আমেদ বেন্ আমাকে সন্দেহ করে নাই ত?”
সামওয়েলি বলিল, “না, আপনার কোন চিন্তা নাই। কোন ইংরাজও ঠাহর করিতে পারিবে না যে, আপনি ইংরাজ।”
মিঃ ডড্লে বলিলেন, “আমেদ বেন্-হাসেন কি ঠিক করিয়াছে, বল। বোট কখন নোঙ্গর তুলিবে? কোথায় বা জাহাজের সঙ্গে দেখা হইবে?”
সামওয়েলি বলিল, “কাল সকালে নোঙ্গর তোলা হইবে। পরদিন সকালে কামোরো দ্বীপের উত্তরে রাস্বাকুতে সেই জাহাজের সঙ্গে আমাদের দেখা হইবে।”
মিঃ ডড্লে বলিলেন, “পরশু? আচ্ছা, পিস্তলটা তোমার সঙ্গে আছে ত?”
সামওয়েলি বলিল, “ঠিক আছে। আমি সুযোগ খুঁজিতেছি।—আমি এখন যাই, অধিক বিলম্ব হইলে সন্দেহ করিতে পারে। সেলাম।”