পাতা:নাবিক-বধূ.djvu/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
৫৭

 কিন্তু ডড্‌লে কোন উত্তর দিলেন না, তিনি প্রথমে মনে করিয়াছিলেন, নিজের ও তাঁহার পিতার কল্পিত নাম বলিবেন, বাসস্থানও যেকোন একটা যায়গায় বলিবেন। কিন্তু হঠাৎ তাঁহার মনে হইল, আমেদ বেন্ যদি সেই অঞ্চলের লোক হয়—তাহা হইলে পরিচয় লইয়া গোল বাধিতে পারে, সে জেরা আরম্ভ করিলেই সর্ব্বনাশ —সুতরাং তিনি পাগলামির ভাণ করিয়া প্রলাপ-বাক্য উচ্চারণ করাই সুসঙ্গত মনে করিলেন। আমেদ বেন্-হাসেন তাঁহাকে নানা কথা জিজ্ঞাসা করিয়া কোন সদুত্তর পাইল না, তখন সে বিরক্ত হইয়া তাঁহাকে বিদায় করিয়া দিল।—তিনি স্বস্থানে উপস্থিত হইয়া অন্যের অলক্ষ্যে গোপনে কিছু আহার করিলেন।—সামওয়েলি তাঁহাকে গোপনে কিছু খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করিয়া দিয়াছিল।

 জাহাজের মাঝি-মাল্লারা জানিত, এই পাগলাটা কিছুই খায় না, কেবলই খোদার নাম কীর্ত্তন করে।—এজন্য তাঁহার প্রতি তাহাদের শ্রদ্ধা-ভক্তি শতগুণ বর্দ্ধিত হইয়াছিল। তাহাদের ধারণা হইয়াছিল, পাগলাটা নিশ্চয়ই কোন ছদ্মবেশী পীর। সুতরাং তাহাদের কেহই তাঁহাকে বিরক্ত করিতে সাহস করিল না।

 পরদিন মধ্যাহ্নকালে কমোরো দ্বীপের তীরভূমি পরিলক্ষিত হইল। —অবশেষে ধাওখানি রাস্‌বাকুর সন্নিহিত হইল। আমেদ বেন্-হাসেন গভীর জলে নোঙ্গর করিয়া তীরে উঠিল। সেই অবসরে সামওয়েলি ডড্‌লের সহিত পরামর্শ করিতে আসিল।

 মিঃ ডড্‌লে সামওয়েলিকে বলিলেন, “কাল সকালে ষ্টীমারখানি দেখা যাইবে। সেই ষ্টীমারের মালপত্র ‘ধাও’র উপর নামাইয়া লওয়া হইলে ষ্টীমার বন্দর ছাড়িয়া চলিয়া যাইবে, তাহার পর আমাদের কায আরম্ভ করিতে হইবে। মধ্যাহ্নে যখন তাহারা খানায় বসিবে—সেই সময়ই উৎকৃষ্ট সুয়োগ। আমাদের ত সন্দেহ করে নাই, সুতরাং তাহার নিশ্চিন্তমনে বসিয়া গিলিবে।—তুমিও তাহাদের দলে থাকিবে, কিন্তু আমার ইঙ্গিতমাত্রই তুমি লাফাইয়া একেবারে হাতিয়ার বাহির করিবে; তাহাদিগকে