বলিবে—নড়িয়াছিস্ কি মরিয়াছিস্।’—ইতিমধ্যে আমি আমেদ বেন্-হাসেনকে বন্দী করিব।—আমার কথা বুঝিয়াছ?”
সামওয়েলি মাথা নাড়িয়া জানাইল, সে ঠিক বুঝিয়াছে। তাহার পর আরও দুই-চারিটি কথার পর সামওয়েলি প্রস্থান করিল। ডড্লে সেই অন্ধকার- কোণে একাকী বসিয়া চিন্তাকুলচিত্তে ঊর্দ্ধাকাশের অগণ্য নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে চাহিয়া রহিলেন। তাঁহার হৃদয় নানা চিন্তায় আন্দোলিত হইতে লাগিল।
পদিন অতি প্রত্যুষে ‘ধাও’র মাঝি-মাল্লারা ব্যস্তভাবে চারিদিকে ঘুরিতে লাগিল,যেন তাহার কি একটা পরিবর্ত্তনের প্রত্যাশা করিতেছে।—আমেদ বেন্-হাসেন অত্যন্ত ব্যস্তভাবে ঘন-ঘন সমুদ্রের দিকে চাহিয়া দাড়ি চুল্কাইতে লাগিল,—কিন্তু তখনও নোঙ্গর উঠিল না।
বেলা একটু অধিক হইলে সকলের আহার শেষ হইল। অনন্তর নোঙ্গর তুলিয়া ‘ধাও’খানি পুনর্ব্বার গন্তব্যপথে যাত্রা করিল। তখন আকাশ বেশ পরিষ্কার, সমুদ্র স্থির, সূর্য্যের উজ্জ্বল রশ্মিজাল সমুদ্রবক্ষে প্রতিফলিত হইতে- ছিল। অনুকূল বাযুপ্রবাহে ‘ধাও’ তীরবেগে ছুটিয়া চলিল।—হঠাৎ ‘ধাও’র উপর কে অস্ফুট আর্ত্তনাদ করিয়া উঠিল, সঙ্গে সঙ্গে ‘ধপ্’করিয়া একটা শব্দ হইল। মিঃ ডড্লে বিপদের আশঙ্কা করিয়া একটু সরিয়া দাঁড়াইতে-না- দাঁড়াইতে হঠাৎ যেন তাঁহার মস্তকের পশ্চাৎভাগে হাতুড়ীর ঘা পডিল।— ব্যাপার কি বুঝিবার পূর্ব্বেই তিনি সেই স্থানে নিপতিত হইলেন, সঙ্গে সঙ্গে তাহার সংজ্ঞা বিলুপ্ত হইল।