সপ্তম পরিচ্ছেদ
ডড্লে অল্পক্ষণ পরে গাঢ় নিদ্রায় অভিভূত হইলেন। পরদিন প্রভাতে তাঁহার নিদ্রাভঙ্গ হইল। এই দীর্ঘনিদ্রায় তাঁহার শরীর বেশ সুস্থ হইল। আমেদ বেন্-কাসেনের দণ্ডাঘাতে তাঁহার মস্তকে যে প্রদাহ উপস্থিত হইয়াছিল, তাহার উপশম হইল।—কিছুকাল চিন্তা করিলে বা কথা বলিলে তাঁহার মাথা ঘুরিয়া উঠিত, সে ভাবটা দূর হইল। মাথা বেশ পাতলা হইল। তখনও তাহার সর্ব্বাঙ্গে কাল বার্ণিস মাখানো ছিল, তিনি তাহা ধৌত করা অযৌক্তিক মনে করিলেন।
নিদ্রাভঙ্গে তিনি সমুদ্রের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন, দেখিলেন, প্রভাত-রৌদ্রে সমুদ্রের নীল জল ঝক্-মক্ করিতেছে, সমুদ্র স্থির, যেন একখানি মুকুর। মৃদু মন্দ শীতল সমীরণ প্রবাহিত হইতেছিল। সেই সুশীতল প্রভাত-সমীরণে তাহার সর্ব্বাঙ্গ যেন জুড়াইয়া গেল।
মিঃ ডড্লে যে জাহাজে আশ্রয়লাভ করিয়াছিলেন, তাহা তেমন বৃহৎ জাহাজ নহে, তাহাতে প্রায় তিন হাজার টন বোঝাই ধরিতে পারিত। জাহাজ খানিতে তেমন অধিক মাল-পত্র না থাকিলেও তাহা দ্রুত চলিতেছিল না। ডড্লে মধ্যাহ্নকালে ধীরে-ধীরে পূর্ব্বোক্ত পাচকের নিকট উপস্থিত হইয়া তাহাকে অভিবাদন করিলেন। পাচকটি হাসিয়া বলিল, “তুমি এতদূর হাঁটিয়া আসিতে পারিয়াছ? ভাল, ভাল, তোনার শরীর সবল হইয়াছে দেখিয়া বড় খুসী হইলাম। তোমার জন্য কি করিতে হইবে বল, বেশ ক্ষুধা হইয়াছে ত?”
পাচক তাঁহার উত্তরের অপেক্ষা না করিয়াই তাঁহাকে কিছু খাবার, আনিয়া দিল। তিনি তাহা আহার করিয়া, জাহাজের একপাশে দাঁড়াইয়া মুক্ত সমুদ্রের পোত দেখিতেছেন, এমন সময় জাহাজের প্রধান মেট্ তাহার সহকারীর সহিত হঠাৎ সেই স্থানে উপস্থিত হইল। মিঃ ডড্লেকে সেখানে