পাতা:নাবিক-বধূ.djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
৭৩

গুপ্ত পরামর্শ শুনিতে পাইবেন, বা শুনিলেও তাহা বুঝিতে পারিবেন, এ সন্দেহ ল্যাম্পিয়ন বা কাপ্তেন কাহারও মনে মুহূর্ত্তের জন্য স্থান পায় নাই।—ডড্‌লে নিঃশব্দ পদসঞ্চারে কেবিনের দরজার নিকট উপস্থিত হইলেন। তিনি শুনিতে পাইলেন, কাপ্তেন ল্যাম্পিয়নকে বলিতেছে, “তুমি আমাকে তাড়াতাডি ডাকিয়া পাঠাইয়াছিলে, খবর কি?”

 ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন বলিল, “সে আজ ভাল নাই।”

 কাপ্তেন বলিল, “এই সামান্য কাযে তুমি এত সময় লইতেছ কেন, তাহা আমি বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছি না। কেপ টাউনে যখন তোমার সহিত আমার বন্দোবস্ত হয়, তখন আমি মনে করিয়াছিলাম, খুব শীঘ্রই ঝঞ্জাটটা মিটিয়া যাইবে।

 ল্যাম্পিয়ন একটু উত্তেজিত স্বরে বলিল, “আমি তোমাকে সেই সময়েই বলিয়াছিলাম, তাড়াতাডি করিলে কোন ফল হইবে না। তুমি কি বুঝিতে পারিতেছ না অতিরিক্ত তাড়াতাডি করিলে তোমার জাহাজের কর্ম্মচারীদের, এমন কি, থালাসীগুলার পর্য্যন্ত মনে সন্দেহ হইবে? তুমি কি আমাদের সর্ব্বনাশের পথ প্রশস্ত করিতে চাও? ঠিকানায় পৌছিয়া হাতে হাতকড়ি পরাই কি তোমার ইচ্ছা?—তোমার ব্যস্ততা দেখিয়া আমার ত তাহাই মনে হয়।

 কাপ্তেন গম্ভীর স্বরে বলিল, “তুমি যে রকম ঢিমে তালে কায করিতেছ, তাহাতে মনে হয় নিজের পায়ে তুমিই কুড়ল মারিবার ব্যবস্থা করিতেছ। যদি তুমি তাড়াতাডি কায শেষ করিতে না পার, তবে আপাততঃ উহা মুলতুবি রাখিয়া দাও। তাহাতে বিপদের আশঙ্কা অল্প।”

 তাহার পর ডাক্তার নিম্নস্বরে দুই তিনটি কথা বলিল, ডড্‌লে তাহা শুনিতে পাইলেন না, কিন্তু তিনি বুঝিলেন—এ কথায় কাপ্তেনের বিলক্ষণ ক্রোধ হইয়াছে। সে উত্তেজিত স্বরে বলিল, “তোমার যা খুশী কর। তোমার ছাগল তুমি ল্যাজের দিকে কাটো, আমার তাহাতে ক্ষতিবৃদ্ধি নাই, কিন্তু যদি শেষে কোন গণ্ডগোল হয়, তাহা হইলে আমার ঘাড়ে দোষ চাপাইও না। বোঝ কর, ইহাতে আমার কোন দায়িত্ব নাই।