জন্য পীড়াপীড়ি করিলে আপনি সেই জল পান করিবেন, একবারে এক দাগের বেশী খাইবেন না। দ্বিতীয় কথা, আপনি কোথায় বসিয়া আহার করেন?”
মিস্ এরস্কাইন বলিলেন, “আজ কাল আমার কেবিনেই খাবার দিয়া যায়।—ভোজনাগারে যাইবার ত শক্তি নাই।”
ডড্লে বলিলেন, “খুব ভাল কথা। আপনি সেই খাবারের কিয়দংশ জানালা দিয়া সমুদ্রে ফেলিয়া দিবেন, কিন্তু কিছুই খাইবেন না, আপনার মামা যেন বুঝিতে পারে ক্ষুধার অভাবে আপনি যৎকিঞ্চিৎ-মাত্র আহার করিয়াছেন। কয়েক দিন বিস্কুট খাইয়াই কাটাইবেন, অন্য উপায় নাই।”
মিস্ এরস্কাইন বলিলেন, “বিস্কুট আমার নিজের কাছেও আছে, তাই খাইব।—কিন্তু তাহাতে মামার মনে সন্দেহ হইবে না ত?”
ডড্লে বলিলেন, “ইহাও চিন্তার কথা বটে, যাহা হউক, আপনি যে অপেক্ষাকৃত সুস্থ হইয়াছেন, এ ভাব প্রকাশ করিবেন না। তাহাদিগকে বুঝিতে দিবেন যেন আপনার রোগ ক্রমেই কঠিন হইতেছে, তাহা হইলে তাহাদের সন্দেহের কারণ থাকিবে না।”
মিস্ এরস্কাইন বলিলেন, “কিন্তু এভাবে কতদিন তাহাদের ভুলইয়া রাখিব?—আমি যে বড়ই সঙ্কটে পডিলাম।”
ডড্লে বলিলেন, “আমার উপর নির্ভর করিয়া থাকুন, একটা উপায় হইবেই। বলিয়াছি ত আপনার জীবনরক্ষার জন্য আমি প্রাণবিসর্জ্জনেও কুষ্ঠিত হইব না। আমি একটা মতলব করিয়াছি, তাহা কার্য্যে পরিণত করিতে পারিনে আপনার জীবনরক্ষায় সমর্থ হইব। আপনি হতাশ হইবেন না। ভগবান আপনাকে রক্ষা করিবেন। আর কোন কথা নাই, এখন আমি বিদায় গ্রহণ করিলাম।”
মিস্ এরস্কাইন বলিলেন, “পরমেশ্বর আপনার মঙ্গল করুন, আমার রক্ষার ভার আপনার উপর।”—অনন্তর মিঃ ডড্লে মিস্ এরস্কাইনের প্রসারিত হস্ত চুম্বন করিয়া স্পন্দিত বক্ষে নিঃশব্দে জাহাজের উপর উঠিলেন।