তিনি কাপ্তেনের কেবিনের নিকট কায করিতে-করিতে ক্রমে সেই কক্ষের অভিমুখে অগ্রসর হইলেন। সে সময় কাপ্তেন জাহাজের ‘ব্রিজে’র উপর ছিলেন। ‘চার্টরুমে’র নিকট তিনজন নাবিক ‘জীবন-তরী’তে কায করিতেছিল, তাহারা কার্য্যানুয়োধে নীচে প্রস্থান করিলে ডেকের উপর তিনি ভিন্ন আর কেহই রহিল না।
মিঃ ডড্লে তীক্ষ দৃষ্টিতে চতুর্দ্দিকে চাহিয়া নিঃশব্দ-পদসঞ্চারে ‘চার্টরুমে প্রবেশ করিলেন, তিনি সেই কক্ষের টেবিলের উপর মানচিত্রখানি প্রসারিত দেখিলেন। এই মানচিত্রখানি তখন তাঁহার নিকট পৃথিবীর যাবতীয় ধনরত্ন অপেক্ষা মহার্ঘ্য বোধ হইল। তিনি ‘করিওলেনস্’ জাহাজে ইহার অনুরূপ মাত্রচিত্র বহুবার দেখিয়াছেন, কিন্তু তাহা যে কোনদিন এভাবে তাঁহার কাযে লাগিতে পারে—ইহা কখন কল্পনাও করেন নাই। যাহা হউক, তিনি অত্যন্ত ব্যগ্রভাবে তীক্ষ দৃষ্টিতে জাহাজের গন্তব্যপথ দেখিতে লাগিলেন। জাহাজখানি তখন কোন স্থান দিয়া চলিতেছিল—তাহা তাঁহার বুঝিতে কষ্ট হইল না। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত্রে জাহাজখানি কোন্ উপকূলের সন্নিকটে উপস্থিত হইতে পারে—তাহাও তিনি ঠিক করিয়া লইলেন। তিনি বুঝিলেন, তাঁহার আনুমানিক সিদ্ধান্ত সত্য হইলে জাহাজখানি সেই সময় লামু দ্বীপের সন্নিকটে উপস্থিত হইবে।—তিনি আশ্বস্ত হইলেন।
তাঁহার আশ্বস্ত হইবার কারণ ছিল। মোম্বাসার উত্তর ‘লামু’ একটি সমৃদ্ধ নগর। এই নগর হইতে জাঞ্জিবার ও মোজাম্বিকে টেলিগ্রাম প্রেরণ করিবার ব্যবস্থা আছে। ডড লে ইহাও জানিতেন যে, ডিউসি-অস্-আফ্রিকা ‘লাইনের’ জাহাজগুলি বোম্বাই নগর হইতে মোম্বাসা ও জাঞ্জিবারে যাত্রা করিয়া ছয় সপ্তাহ অন্তর একবার লামু নগরে নোঙ্গর করে।—সুতরাং তাঁহার বিশ্বাস হইল, যদি তিনি কোন উপায়ে মিস্ এরস্কাইনকে লইয়া এই নগরে আশ্রয় গ্রহণ করিতে পারেন, তাহা হইলে তাঁহাদের বিপদের আশঙ্কা দূর হইতে পারে। কিন্তু তাঁহার এ আশা কি পূর্ণ হইবে?
আরও দুই একটি বিষয়ে তাঁহার সন্দেহ ছিল, সেই সন্দেহ নিরাকরণের