উদ্দেশ্যে তিনি সেই কক্ষের সেল ফের উপর হইতে ‘এড্মিরাল টি পাইলট্’ নামক পুস্তকখানি লইয়া পড়িয়া আফ্রিকার উপকূল সম্বন্ধে কোন কোন জ্ঞাতব্য বিষয় জানিয়া লইলেন। হঠাৎ সেই কক্ষের বহির্ভাগে কাহার পদশব্দ শুনিয়া তিনি তাড়াতাড়ি পুস্তকখানি যথাস্থানে রাখিয়া চক্ষুর নিমিষে মেঝের উপর বসিয়া পডিলেন, এবং ‘চার্ট টেবিলে’র পিতলের হাতল পরিষ্কার করিতে লাগিলেন। পর মুহূর্ত্তে জাহাজের প্রধান মেট্ সেই কক্ষে প্রবেশ করিয়া ডড্লেকে দেখিয়া অত্যন্ত বিস্মিত হইল, তাহার পর ক্রুদ্ধ স্বরে বলিল, “তোকে এখানে আসিতে কে বলিয়াছে?—চুরী করিবার মতলবে এই ঘরে ঢুকিয়াছিস বুঝি? এই মুহূর্ত্তেই এখান হইতে চলিয়া যা, বিলম্ব করিলে জুতা মারিয়া পিঠ ফাটাইয়া দিব।”
প্রধান মেট্ সবেগে পা ছুঁড়িল, কিন্তু তাহার বুট ডড্লের অঙ্গস্পর্শ করিবার পূর্ব্বেই তিনি সেই কক্ষ ত্যাগ করিয়া পলায়ন করিলেন। প্রধান মেট্ যে তাঁহার অভিসন্ধি বুঝিতে পারে নাই বা তাঁহাকে মানচিত্রের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে দেখে নাই, ইহা তিনি সৌভাগ্যের বিষয় মনে করিতেন। ধরা পড়িলে তাঁহার কি দশা হইত, তাহা অনুমান করা কঠিন নহে।—বেলা আট ঘটিকার সময় ডড লে নীচের ডেকে নামিয়া আসিলেন।
অপরাহ্নে মিঃ ডড্লে মিস এরস্কাইনের সাক্ষাৎ লাভের আশায় উপরের ডেকে আসিলেন। তাঁহার বিশ্বাস ছিল, নিস এরস কাইন বায়ুসেবনের উদ্দেশ্যে কিছুকালের জন্যও উপরের ডেকে আসিয়া বসিবেন। প্রায় অর্দ্ধঘণ্টা পরে মিস্ এরস কাইন তাঁহার মাতুল ডাক্তার ল্যাম্পিয়নের স্কন্ধাবলম্বন করিয়া ধীরে-ধীরে ডেকে আসিয়া বসিলেন। সেদিনও মিস্ এরস্কাইনকে অত্যন্ত দুর্ব্বল বলিয়া বোধ হইল। তিনি অবসন্নভাবে চেয়ারে বসিয়া হাঁপাইতে লাগিলেন। তাঁহার কেবিন হইতে এইটুকু আসিতেই তিনি অত্যন্ত পরিশ্রান্ত ইয়াছিলেন।—ডড্লে দেখিলেন, ল্যাম্পিয়নের মুখ অত্যন্ত প্রফুল্ল।
ল্যাম্পিয়ন তাঁহার ভাগিনেয়ীকে বলিল, “কোন চিন্তা নাই, মা। গরমে তুমি হাঁপাইতেছ। তোমার শরীর আজ অনেক ভাল বুলিয়াই ত বোধ