মিস্ এরস্কাইন বলিলেন, “যখনই বলিবেন তখনই আমি আপনার সঙ্গে জাহাজ ত্যাগ করিব, আমার আর বিলম্ব সহ্য হইতেছে না। আমার জীবন নষ্ট করিবার জন্য যে ভীষণ ষডযন্ত্র হইয়াছে, এ বিষয়ে আমার আর সন্দেহ নাই।—এখান হইতে পলাইতে পারিলেই বাঁচি।
ডড্লে বলিলেন, “যথাসময়ে আপনি সংবাদ পাইবেন। এখনও আমার উদ্যোগ-আয়োজনের কিছু বাকি আছে, কিন্তু কালই পলায়ন করা স্থির। কাজটা অত্যন্ত কঠিন, কোন রকম ভুলচুক হইলে আর রক্ষা নাই।”
ডড্লে বোধ হয় আবও কোন কথা বলিতেন, কিন্তু হঠাৎ ডাক্তার ল্যাম্পিয়ন সেই স্থানে উপস্থিত হইল। তাহার হাতে এক পেয়ালা ব্রথ্। সে তার ভাগিনেয়ীকে বলিল, “মা, এই ব্রথ্টুকু খাও দেখি, শরীরে বল পাইবে।”
মিস্ এরস্কাইন মাথা নাডিয়া ক্ষীণস্বরে বলিলেন, “না মামা, আমি উহা খাইতে পারিব না, আমার গা বমি-বমি করিতেছে। উহা খাইলেই বমি হইবে।”
ল্যাম্পিয়ন সেই ব্রথ্টুকু তাঁহাকে পান করাইবার জন্য কত অনুনয় বিনয় করিল, শেষে ভয় প্রদর্শনও করিল, কিন্তু মিস্ এরস্কাইন তাহা পান করিলেন না। তখন ল্যাম্পিয়ন সেই পেয়ালাটি একটি গবাক্ষে রাখিয়া বলিল, “আমি ইহা এখানে রাখিয়া চলিলাম, এখন খাইবাব ইচ্ছা না হয়, খানিক পরে ব্রথ টুকু পান করিও। না খাইলে শরীরে বল পাইবে কেন? রোগের সময় এত অবাধ্য হইলে কি শীঘ্র রোগ সারে? ঔষধ পথ্য নিয়মমত খাইতে হইবে।”
মিস্ এরস্কাইন বললেন, “আর রোগ সারিয়াছে।—এখন মরলেই বাঁচি। এ যাতনা আর সহ্য হয় না। কিন্তু মামা, তোমার দয়ার জন্য আমি তোমার নিকট চিরকৃতজ্ঞ, তুমি আমার যেরূপ সেবাশুশ্রুষা করিতেছ, মাবাপেও ততদূর করিতে পারে না। তোমার স্নেহ-মমতা আমার মা স্বর্গ হইতে দেখিতে পাইতেছেন।”