পাতা:নাম-সার - গিরিবালা দেবী.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রকাশিকার নিবেদন

 বহু বৎসর পূর্ব্বে পূজনীয়া সন্ন্যাসিনী গৌরীমাতার রত্নগর্ভা জননী— মহাকালীর সাধিকা গিরিবালা দেবী তাঁহার রচিত একখানি “নামসার” আমার হাতে দিয়া বলিয়াছিলেন, “তুমি এখানি আবার ছেপো, আমার মা-কালীর নাম প্রচারে সহায় হয়ো।” এতকাল তাঁহার নির্দ্দেশ পালন করিতে পারি নাই, এজন্য আমার মনে খুবই দুঃখ ছিল, নিজেকে অপরাধী মনে হইত। সুদীর্ঘকাল পরে হইলেও আজ তাঁহার অলোকসামান্যা সন্ন্যাসিনী কন্যার শততম আবির্ভাব-তিথিতে ‘নামসার’ পুনরায় প্রকাশ করিতে পারিয়া নিজেকে কৃতার্থ মনে করিতেছি। এবং এই পুণ্যতিথিতে মহিমময়ী মাতা-কন্যাকে অসংখ্য নমস্কার জানাইতেছি।

 সাধিকা লেখিকার ভক্তিমূলক এবং কবিত্বপূর্ণ সঙ্গীত সম্পর্কে বাংলার সর্ব্বজনমান্য কবি শ্রীযুক্ত কালিদাস রায় মহাশয় তাঁহার ‘ভূমিকায়’ সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করিয়াছেন। লেখিকার বিষয়ে আমি সংক্ষেপে আরও কিছু বলতে চাই। শতাধিক বৎসর পূর্ব্বের এই গৃহবধূ যে কেবল ‘নামসার’ রচনা করিয়াছিলেন তাহা নহে, ‘বৈরাগ্যসঙ্গীতমালা’ নামেও তাহার একখানি পুস্তিকা বহুপূর্ব্বে প্রকাশিত হইয়াছিল। সাংখ্যদর্শন সম্বন্ধেও তিনি একটি প্রবন্ধ লিখিয়াছিলেন। তিনি সংস্কৃতভাষাও জানিতেন, ইংরাজি ও পারসীও কিছু কিছু জানিতেন। বস্তুতঃ গিরিবালা দেবীর চরিত্র বহুগুণে মণ্ডিত ছিল। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁহার সঙ্গীত শুনিয়া প্রীত হইয়াছিলেন। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীমা সারদা দেবী, শ্রীমৎ স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখ অনেকেই তাঁহার ভবানীপুর গৃহে পদার্পণ করিয়াছেন। “গৌরীমা”-গ্রন্থে এই বিষয় সবিস্তার বর্ণিত হইয়াছে।