পাতা:নারীর মূল্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নারীর মূল্য
৩০

যে ওজন হইতে পারে না, তাহা নিশ্চয় বলিতে পারি। প্রাচীন বেবিলনের ১৩৭ হইতে ১৪৩ ধারায়ও ঠিক এইমত ব্যবস্থাই আছে। অথচ এই বেবিলন ইহুদিদিগের অপেক্ষা সহস্র-গুণে শ্রেষ্ঠ ছিল। অল্পদিন পূর্বেও ইউরোপের নারী-সম্বন্ধে অনেকেই লিখিয়াছেন, “She was sold into slavery to her husband by her father and was treated with a different legal code from her brother”; “wife of the labourer a chattel of the estate, her life an unceasing drudgery” তবে কোথাও বা বাহিরের চাকচিক্য আছে স্বীকার করি, এবং কোথাও বা ভিতর হইতে সংশোধনের চেষ্টা হইতেছে—কিন্তু সে সংশোধনের ভার লইয়াছে নারী। পুরুষ উপযাচক হইয়া কোনদিন ভাল করিতে আসে নাই, কোনদিন আসিবেও না। যিনি বড় ভাল, তিনি দয়া করিয়া বই লিখিয়া গিয়াছেন, যেমন মিল, কনডোরসেট্। কিন্তু মুখ্যতঃ তাহা বই লেখার গৌরবের জন্যই। প্রাচীনকালে প্লেটোও রিপব্‌লিকে লিখিয়া গিয়াছেন, “This sex which we keep in obscurity and domestic work, is it not fitted for nobler and more elevated functions? Are there no instances of courage, wisdom, advances in all the arts? May hap these qualities have a certain debility, and are lower than in ourselves, but, does it follow that they are, therefore, useless to the country?” এ-লেখার সূক্ষ্ম বিচার করিতে চাহি না এবং ‘may hap’ কথাটারও ব্যাখ্যা করিতে চাহি না। তবে সৎ অভিসন্ধি যে ইহাদের একেবারেই ছিল না, এ-কথা বলিলেও অন্যায় বলা হইবে। কিন্তু বিশেষ কোন ফলও ইহাতে ফলে নাই—বোধ করি, সত্যকার প্রয়াস ছিল না বলিয়াই।

 বই লেখা ছাড়া পুরুষ কোথাও যে নারীকে যথার্থ সম্মান দিবার চেষ্টা করিয়াছেন, তাহা অবগত নহি; তবে এ-কথা জানি যে, যদি কোন দেশে রমণী যথার্থ শ্রদ্ধা-সম্মান লাভ করিয়া থাকে ত সে শুধু