এবং উগাণ্ডা প্রদেশে আছে। বস্তুতঃ সে-দেশে রমণী রাণী পর্যন্ত হয়। অথচ Captain Speke তাঁহার Discovery of the Nille গ্রন্থে, কঙ্গো ও উগাণ্ডা দেশের ওয়াহুমা বড় লোকেরা কি করিয়া কথায় কথায় প্রায় বিনা-অপরাধে স্ত্রী-হত্য করে, নিজের হাতে আঁকিয়া তাঁহার ছবি পর্যন্ত দিয়া গিয়াছেন; ঐ গ্রন্থে লিখিয়াছেন, হাতে দড়ি বাঁধিয়া স্ত্রীগুলিকে বধ্যভূমিতে টানিয়া লইয়া যাইবার সময় তাহারা যেভাবে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিতে কাঁদিতে যায়, শুনিলে অতিবড় পিশাচেরও দয়া হয়, অথচ সে-দেশের পুরুষগুলি তাহাতে ভ্রক্ষেপ করে না। গ্রন্থকারের তাঁবুর পার্শ্বের পথের উপর দিয়া তাই প্রায়ই বামা-কণ্ঠে কান্না উঠিত—“হে মিয়াঙ্গি, হে বাক্কা” “ও আমার স্বামী! ও আমার রাজা!” স্বামী এবং রাজাটি বোধ করি তখন মৃদু-মধুর হাস্য করিতেন। সেই দেশের রাজা কিনেরার মৃত্যুর অব্যবহিত পরের ঘটনাগুলি যাহা কাপ্তেন স্পিক তাঁহার পুস্তকে চোখে দেখিয়া বর্ণনা করিয়া করিয়াছেন, তাহা পাঠ করিলে মনে হয়, শিশুরা মাটির পুতুলের যে মূল্য দেয়, সে মূল্যও তথাকার পুরুষেরা নারীকে দেয় না। একস্থানে লেখা আছে, মৃত পিতার সমস্ত কন্যাগুলিকেই ছোট রাজা বিবাহ করিলেন, এবং সাত দিন পরে তাহার তিনটিকে ঠিকমত ঙাজিগ (সেলাম) না করার অপরাধে জীবন্ত দগ্ধ করিলেন। প্রায় পর্যটকই পুথিবীর আদিম অধিবাসীদের সম্বন্ধে লিখিয়া গিয়াছেন যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একটা ভালবাসার ব্যাপার অধিকাংশ অসভ্য জাতিরাই অবগত নহে। মন্টেরো বলেন, “The Negro knows not love, affection or Jealousy, they have no words or expression in their language indicative of affection or love.” সার জন লবক্ ঐ দেশেরই সম্বেন্ধে বলেন, “are so cold and indifferent to one another that you would think there was no such thing as love between them.” কাফ্রিদের সম্বন্ধে “no feeling of love in marriage.” জারিবদের সম্বন্ধে “affection between man and wife out of the question.” অথচ
পাতা:নারীর মূল্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৭
নারীর মূল্য