পাতা:নারী-চরিত - সৌদামিনী সিংহ.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ২৯ )

রাজধানী বিএনা নগরে বাস করা তাঁহার পক্ষে দুঃসাধ্য হইয়া উঠিল। তখন কি করেন অগত্যা রাজধানী পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিলেন। অবশেষে হঙ্গেরি প্রদেশে উপস্থিত হইয়া, তথাকার প্রজাদিগকে আহ্বান করিলে, তাহারা সকলে রাজ্ঞী সমক্ষে সমবেত হইল। রাজ্ঞী থেরিসা আপন ক্রোড়দেশে শিশুসন্তানকে লইয়া হীনবেশে ও স্নানমুখে তাহাদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, ‘‘হে প্রজানিকর! দেখ, আমি দুর্ভাগ্যবশতঃ আত্মপরিজন কর্ত্তৃক ত্যক্ত ও প্রবল শত্রু দ্বারা তাড়িত হইয়া তোমাদিগের শরণাগত হইয়াছি; এক্ষণে তোমাদিগের বীরত্ব প্রভাব ও আমার একান্ত অধ্যবসায় ব্যতীত শত্রু দমনের দ্বিতীয় উপায় নাই। এই শিশু রাজকুমারকে তোমাদিগের হস্তেই সমর্পণ করিতেছি, যাহাতে ইহার জীবন রক্ষা ও উত্তরকালে রাজ্যপ্রাপ্তি হয়, তদ্বিষয়ে সবিশেষ যত্ন করা তোমাদিগের অতীব কর্ত্তব্য”।

 রাজ্ঞীর মলিন ভাব ও সুমধুর বচন চাতুরীতে হঙ্গেরীবাসী প্রজাপুঞ্জ সাতিশয় স্নেহ পরবশ হইয়া নিরতিশয় দুঃখিত হইল ও তাঁহাকে স্বরাজ্যে পুনঃস্থাপন জন্য ব্যস্ত হইয়া আপন আপন কোষ হইতে তরবারি বহির্গত করিয়া সকলে এক বাক্যে প্রতিজ্ঞা করিল, যে, ‘‘আমরা রাজ্ঞী মেরিয়া থেরিসার নিমিত্ত প্রাণ পর্য্যন্ত সমর্পণ করিয়া রাজ্য রক্ষা করিব’’।