পাতা:নারী-চরিত - সৌদামিনী সিংহ.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
( ৪২ )

লেন, তখন তাঁহার নয়ন যুগল হইতে অজস্র অশ্রুবারি নির্গত হইতে লাগিল। মুখমণ্ডল পাণ্ডুবর্ণ ও শোকে বাক্‌শক্তি রহিতপ্রায় হইয়া বহুকষ্টে এক এক বার হা পিতঃ! হা পিতঃ! বলিয়া আর্ত্তনাদ করিতে লাগিলেন। দর্শকগণ অবলা কন্যার এরূপ অসামান্য পিতৃভক্তি দেখিয়া অত্যন্ত চমৎকৃত ও নিতান্ত বিষাদিত হইল, এমন কি, তৎকালে কঠিন হৃদয় রক্ষকেরাও শোকাকুল চিত্তে নয়ন জল ফেলিয়াছিল।

 পরক্ষণেই ঘাতকেরা মুর সাহেবের শিরচ্ছেদন করিল। পিতৃবৎসলা মার্গ্রেটের আর শোকের পরিসীমা রহিল না। তিনি একান্ত শোকবিহ্বল হইয়া হাহাকার শব্দে অনবরত রোদন করিতে লাগিলেন। বিনা দোষে মুর সাহেবের প্রাণ সংহার হওয়াতে সমস্ত ইয়ুরোপবাসি লোকেরা যৎপরোনাস্তি শোক প্রকাশ করিয়াছিল।

 মার্গ্রেট, অনেক কৌশলে পিতার মৃত দেহ সংগ্রহ ও সমাহিত করেন। কেবল রাজাজ্ঞায় তদীয় ছিন্ন মস্তক চতুর্দ্দশ দিবস “লণ্ডনব্রীজ” নামক টেমস্‌ নদীর কোন প্রকাশ্য সেতু সমক্ষে রক্ষিত হয়। পরে নির্দ্দয় সম্রাট্‌ ঐ মুণ্ড নদীজলে ভাসাইতে আদেশ করিলে, বিবি রোপর বহুকষ্টে সেই মস্তক রক্ষকদিগের নিকট হইতে ক্রয় করেন। সম্রাট্‌, মার্গেট কর্ত্তৃক অপরাধির মস্তক ক্রয়ের সংবাদ পাইয়া তৎক্ষণাৎ তাঁহাকে রাজসভায় আনয়ন করিলেন। সুচতুরা মার্গ্রেট অপরিসীম