পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যুগ
৯৫

বিদ্যালয়ে শিল্প শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল না—সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়েই গ্রন্থ পাঠ এখানে বেশী হইত। কিন্তু হ্যাম্পটনে কৃষি, পশুপালন, শিল্প ইত্যাদির দিকেই বেশী দৃষ্টি থাকিত।

 আমি ওয়াশিংটনে থাকিতে থাকিতে এই দুই প্রকার শিক্ষালয়ের প্রভেদ বুঝিতে পারিলাম। ওয়াশিংটনের ছাত্রদের বেশ দুপয়সা আছে। তাহারা কিছু ‘বাবু’—তাহাদের পোষাক পরিচ্ছদ উচ্চ ধরণের—বিলাসের মাত্রাও যথেষ্ট। বোধ হয় ইহারা লেখাপড়া হিসাবেও মন্দ নয়। নিতান্ত গণ্ডমূর্খ আসিয়া ওয়াশিংটনে ঢুকিতে পায় না। কিন্তু হ্যাম্পটনের আবহাওয়া সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। ওখানকার চালচলন ভিন্ন রকমের। দাতারা ছাত্রদের বেতন দান করিতেন—সুতরাং উহা অবৈতনিক বিদ্যালয়। কিন্তু কাপড় চোপড়, কাগজ পত্র, পুস্তক সরঞ্জাম ইত্যাদি এবং খাওয়া পরার খরচ ছাত্রদিগকেই দিতে হইত। এই টাকা ছাত্রেরা খাটিয়া সংগ্রহ করিত। কেহ কেহ বাড়ী হইতেও কিছু আনিত।

 ওয়াশিংটনের ছাত্রেরা একেবারেই স্বাবলম্বী নহে—তাহাদের খরচপত্র সম্বন্ধে তাহারা নিশ্চিন্তভাবে দিন কাটাইত। কিন্তু হ্যাম্পটনে স্বাবলম্বন এবং নিজের খরচ নিজে চালানই ছাত্রদিগের বিশেষ লক্ষণ। ওয়াশিংটনের ছেলেরা বাহিরের ‘চটকে’ বেশ দৃষ্টি রাখিত। জীবনের প্রকৃত ভিত্তি আত্মসম্মান, আত্মপ্রতিষ্ঠা, আত্মশক্তিতে বিশ্বাস ইত্যাদির প্রতি তাহাদের বিশেষ নজর ছিল না। জীবনের লক্ষ্য, মানবের কর্ত্তব্য, ভবিষ্যতের আদর্শ ইত্যাদি