পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

 আমাকে পাইয়া নিগ্রোরা যারপরনাই সন্তুষ্ট হইল। সকলেই নানা উপায়ে আমার কার্য্যে সাহায্য করিতে আসিল।

 আমি প্রথমেই স্থান খুঁজিতে বাহির হইলাম। একটা জায়গা পাওয়া গেল। সহরের মধ্যে নিগ্রোদিগের একটা ধর্ম্মমন্দির ছিল তাহারই পার্শ্বে একটা ভাঙ্গা বাড়ী দেখিতে পাইলাম। এই “পোড়ো বাড়ী”-টাতেই বিদ্যালয় খোলা হইল। বিশেষ বিশেষ উৎসবাদি বা বক্তৃতা ও সম্মিলনের জন্য গির্জ্জাঘরটি ব্যবহার করিতাম।

 ঘর দুইটাই অতি জীর্ণ অবস্থায় ছিল। বর্ষাকালে ঘরের ভিতর বৃষ্টির জল চুঁইতে থাকিত। অনেক দিন ছাত্রেরা আমার মাথায় ছাতা ধরিয়া বসিত—আমি ছেলেদের পড়া শুনিতাম। কোন কোন সময়ে আমি যখন খাইতে বসিতাম আমাদের বাড়ীর মালিক আমার মাথায় ছাতা ধরিয়া দাঁড়াইতেন।

 আলাবামার নিগ্রোরা এসময়ে রাষ্ট্রনৈতিক হুজুগে খুব মাতিয়া গিয়াছিল। তাহাদের ইচ্ছা, আমিও তাহাদের আন্দোলনে যোগ দিয়া তাহাদের কার্য্যে সাহায্য করি। তাহারা অন্য জাতীয় লোককে রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে বেশী বিশ্বাস করিত না। এজন্য তাহারা আমাকে রাষ্ট্রীয় আন্দোলনে যোগ দিতে বড় পীড়াপীড়ি করিল। এক বৃদ্ধ আসিয়া আমার কাণে প্রায়ই জপিত—“ভায়া, তুমি এবার কাহাকে ভোট দিবে স্থির করিয়াছ? আমার ইচ্ছা আমরা যাঁহাকে দিব মনে করিয়াছি তাঁহাকেই তুমিও দিও। অনুরোধটা রাখিবে কি? আমরা কাগজ পত্র পড়িতে জানি না, জানইত।