পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

 ১৮৮১ সালের ৪ঠা জুলাই তারিখে সেই পোড়ো বাড়ীতে স্কুল খুলিলাম। কৃষ্ণাঙ্গ-সমাজ খুব উৎসাহের সহিত আমার কার্য্যে সাহায্য করিল। শ্বেতাঙ্গ-সমাজের অনেকেই আমার উপর বিরক্ত হইলেন। তাঁহারা নিগ্রোমহলে শিক্ষাবিস্তারের বিরোধী। তাঁহাদের বিশ্বাস নিগ্রোরা লেখা পড়া শিখিলে ক্ষেতের জন্য কুলী পাওয়া যাইবে না—গৃহস্থালীর জন্য চাকর জুটিবে না। নিগ্রোরা আর শারীরিক পরিশ্রম করিতে অস্বীকার করিবে—তাহাদের মধ্যে বিলাস ও বাবুগিরি প্রবেশ করিবে। ফলতঃ দেশময় আর্থিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিপ্লব উপস্থিত হইবে।

 শ্বেতাঙ্গদের এরূপ বিশ্বাসের যথেষ্ট কারণও ছিল। এতদিন যে সকল নিগ্রো লেখা পড়া শিখিয়াছে তাহারা সকলেই বাবু! আজ কাল মাথায় লম্বা টুপি, চোখে সোণার চস্‌মা, হাতে গিল্টি করা ছড়ি, পায়ে সৌখীন বুট—ইত্যাদি আমাদের “শিক্ষিত” নিগ্রোর লক্ষণ হইয়া পড়িয়াছে। কাজেই আরও শিক্ষার প্রসার হইলে নিগ্রোরা যে ক্রমশঃ কিম্ভূতকিমাকার জানোয়ার হইয়া পড়িবে এরূপ সন্দেহ করা অন্যায় নহে। কিন্তু বিদ্যাশিক্ষার আদর্শ বদলান যায়, এবং আদর্শ বদলাইতে পারিলে শিক্ষিত লোকের মতি গতি, ভাব ভঙ্গী ইত্যাদিও বদলান যায়। যথার্থ শিক্ষাপ্রচার করিতে পারিলে প্রকৃত ‘মানুষ’ই গড়িয়া তোলা সম্ভব। এই শ্বেতাঙ্গগণ তাহা বুঝিতেন না। এজন্য তাঁহারা আমার কর্ম্মের বিরুদ্ধেও দাঁড়াইলেন।

 যাহ। হউক, টাস্কেজীতে শিক্ষাপ্রচার-কর্ম্মে আমার দুইজন বন্ধু