পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তাবলে বিদ্যালয়
১৩৫

ছাত্রগণের মামুলি ধারণাই ছিল। তাহারা বড় বড় বই পড়িয়াছে—খুব কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহার করিতে শিখিয়াছে। লম্বা চৌড়া নামওয়ালা বিষয়ের নাম করিতে পারিলেই তাহারা খুসী হয়। তাহারা ল্যাটিন ও গ্রীক ভাষায় কিঞ্চিৎ জ্ঞানের অধিকারী। তাহারা এই সকল ‘বড় কথা’র জাহির করিয়া বেড়াইতে অত্যধিক লালায়িত।

 বিদেশীয় ভাষা শিখিবার ইচ্ছাটা নিগ্রোসমাজে একটা নেশায় পরিণত হইয়াছিল। আমি আলাবামা প্রদেশে পল্লীপর্য্যবেক্ষণ কালে দেখিতে পাই যে, একটি যুবক অতি কদর্য্য ঘরে অপরিষ্কার কাপড় চোপড় পরিয়া বসিয়া আছে, অথচ তাহার হাতে একখানা ফরাসী ভাষার ব্যাকরণ-গ্রন্থ।

 আমার এই প্রথম ছাত্রদিগের পুঁথিগত বিদ্যার বড়াই দেখিয়া সত্যসত্যই লজ্জিত হইতাম। তাহারা ব্যাকরণের লম্বা লম্বা সূত্র আওড়াইয়া মনে করিত তাহারা কতবড়ই না পণ্ডিত। অথচ ভাষাজ্ঞান তাহাদের কিছুমাত্র হয় নাই। অনেকে গণিতের ফর্ম্মুলাগুলি মুখস্থ করিয়া ফেলিয়াছে—সুদকষা, ডিস্কাউণ্ট, ষ্টক সব বিষয়েরই সূত্রগুলি তোতাপাখীর মত বলিতে শিখিয়াছে। অথচ ব্যাঙ্ক কাহাকে বলে চোখে দেখে নাই—এমন কি নামও শুনে নাই। ব্যবসা বাণিজ্যের খাতাপত্র কেমন করিয়া লিখিতে হয় তাহা জানে না। টাকা পয়সার হিসাব রাখিবার নিয়ম কখনই দেখে নাই। বলা বাহুল্য তাহারা সংসারের কাজকর্ম্মের মধ্যে গণিতশাস্ত্রের প্রয়োগ সম্বন্ধে