পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তাবলে বিদ্যালয়
১৪১

 এই নূতন স্থানে ও নূতন গৃহে স্কুল বসান কাজটার মধ্যে কতকটা বিষয় লক্ষ্য করিবার প্রয়োজন। আমরা একজনও বাহিরের কুলী এজন্য নিযুক্ত করি নাই। আমরা নিজেই স্বহস্তে সূত্রধরের কর্ম্ম, কর্ম্মকারের কার্য্য, ঝাড়ুদারের কাজ, ইত্যাদি করিয়াছিলাম। বিকালে স্কুলের ছুটির পর ছাত্রেরা এই সকল কার্য্যে সাহায্য করিত। মেরামত করা, পরিষ্কার করা, ধোয়া, ঝাড়া, যথাস্থানে সাজান—সকলই আমরা সমবেত হইয়া সম্পন্ন করিয়াছিলাম।

 যখন এই আস্তাবলে ও মুরগীশালায় স্কুল বেশ নিয়মিতরূপে চলিতে লাগিল তখন আমাদের জমির সম্মুখের খানিকটা অংশ পরিষ্কার করিয়া লইলাম। ইহাতে শাকশব্জী, ফুল ফল ইত্যাদি বুনিবার জন্য ইচ্ছা ছিল। ছাত্রেরা এ কাজ করিতে প্রথম প্রথম বেশী রাজি হইত না। তাহারা মাটি কোদ্‌লাইতে অপমান ও লজ্জা বোধ করিত। লেখাপড়া শিখিতে আসিয়া কোদাল ধরিতে হইবে—স্বপ্নেও তাহারা পূর্ব্বে ভাবে নাই। লেখা পড়া শিখিবার সঙ্গে মাটি কাটার সম্বন্ধই বা কি—তাহারা বুঝিত না। তাহারা মনে করিত তাহাদিগকে মজুরের কাজ করাইয়া লইয়া স্কুলের পয়সা বাঁচান হইতেছে। পূর্ব্বেই বলিয়াছি, আমাদের ছাত্রগণের মধ্যে অনেকেই অন্যান্য পাঠশালার গুরুমহাশয়গিরি করিয়া আসিয়াছেন। তাঁহারা এরূপ নিন্দাকর ও অপমানজনক কাজে একেবারেই নারাজ। তাঁহাদের মনে হইতে লাগিল—সময় বৃথা নষ্ট করা হইতেছে মাত্র।