পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪২
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

 কিন্তু আমার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা আমি লোক লাগাইয়া জমি পরিষ্কার করিব না। আমার সুচিন্তিত শিক্ষা প্রণালী কোন মতেই অর্জ্জন করিব না। শারীরিক পরিশ্রম করা আমার মতে উচ্চ শিক্ষার প্রধান অঙ্গ। যাহারা হাতে পায়ে খাটিয়া কাজ করিতে অনিচ্ছুক তাহারা আমার বিবেচনায় অশিক্ষিত, এমন কি কুশিক্ষিত। আমি সকল ছাত্রকেই এই নূতন শিক্ষার আদর্শ বুঝাইতে লাগিলাম। কথায় বেশী উপকার হইল না। আমি নিজে একাকী মাটি কাটিতে আরম্ভ করিলাম। জমি অনেকটা পরিষ্কার হইয়া আসিল। তাহাদের সাহায্য না লইয়াই বিদ্যালয়ের চারি পাশ যথেষ্ট সুন্দর করিয়া ফেলিলাম। ছাত্রেরা দেখিল আমার অপমান কিছুই হইতেছে না। ক্রমশঃ তাহারাও আমার কাজে সাহায্য করিতে আসিল। এইরূপে ৬০ বিঘা জমি সকলে মিলিয়া চষিয়া ফেলিলাম।

 এদিকে শ্রীমতী ডেভিড্‌সন জমির দাম শোধ করিবার জন্য নানা কৌশলে টাকা তুলিতে থাকিলেন। তিনি আমাদের বিদ্যালয়ে কএকটা প্রদর্শনী বা মেলা খুলিলেন। এজন্য কৃষ্ণাঙ্গ শ্বেতাঙ্গ দুই মহলেই তিনি সর্ব্বদা ঘুরিয়া বেড়াইতেন। মেলার উদ্দেশ্য ও কার্য্য-প্রণালী সর্ব্বত্র প্রচারিত হইল। টাস্কেজীর লোকেরা কেহ কিছু আলু, কেহ কয়েকটা রুটি, কেহ কোন ফল ইত্যাদি দান করিলেন। এইগুলি বেচিয়া পয়সা আসিল। এইরূপ গোটাকয়েক মেলার ফলে টাকা মন্দ জমা হইল না।

 তাহার পর নগদ টাকার জন্যও চাঁদার খাতা খোলা গেল।