পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অর্থচিন্তা ও বিনিদ্র যামিনী
১৪৯

যাইতাম। ইহাতেও তাহারা বিদ্যালয়কে নিজের জিনিষ বলিয়া আদর করিতে অভ্যস্ত হইত। জমির দাম শোধ করিবার জন্য তাহাদিগকেই চেষ্টা করিতে হইবে ইহা জানিবামাত্র তাহারা বিদ্যালয়ের জন্য নূতনভাবে আত্মীয়তার সম্বন্ধ পোষণ করিতে লাগিল। সাদা কাল চামড়ার ভেদ ভুলিয়া যাইয়া সকলেই বিদ্যালয়কে সমস্ত টাস্কেজীর যৌথ প্রতিষ্ঠানরূপে ভাবিতে থাকিল।

 শ্বেতাঙ্গদিগের মধ্যে আজ টাস্কেজীর অনেক বন্ধু রহিয়াছেন। আমি প্রথম হইতেই ইহাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্বন্ধ রক্ষা করিয়া আসিয়াছি। দক্ষিণ প্রান্তের নিগ্রোগণকেও আমি এই বন্ধুত্বের সম্বন্ধে শ্বেতাঙ্গদিগের সঙ্গে ব্যবহার করিতে চিরকাল উপদেশ দিয়াছি।

 আমরা টাকা তুলিতে লাগিলাম। মেলা, প্রদর্শনী, মুষ্টিভিক্ষা, চাঁদা ইত্যাদি নানা উপায়ে আমরা তিন মাসের মধ্যেই মার্শালের ৭৫০৲ দেনা শোধ করিলাম। তার পর দুই মাসের ভিতর অবশিষ্ট ৭৫০৲ জোগাড় করিয়া জমির মালিককে দিয়া ফেলিলাম। জমিটা সম্পূর্ণরূপেই আমাদের সম্পত্তি হইয়া গেল। সুখের কথা এই সমস্ত টাকাই টাস্কেজী নগরের শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গ লোকদের নিকট হইতেই উঠিয়াছিল।

 এখন আমরা জমি চষিবার সুব্যবস্থা করিতে প্রবৃত্ত হইলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ত্রিবিধ। প্রথমতঃ, এই চাষবাস করিলে বিদ্যালয়ের জন্য কিছু লাভ হইবে। দ্বিতীয়তঃ, ছাত্রেরা ক্ষেতে কাজ করিয়া কৃষিকর্ম্মে অভিজ্ঞতা লাভ করিবে। তৃতীয়তঃ, আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক খাওয়ার সুখও বেশ হইবে।