পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অসাধ্য সাধন
১৬১

এতগুলি কাজ শিখিয়া ফেলিবে। তাহারা স্বাবলম্বী হইতে অভ্যস্ত হইবে। আর, এত বড় ইমারতের জন্য মাটি খুঁড়া হইতে আরম্ভ করিয়া চূণকাম ও রংকরা পর্য্যন্ত সকল কাজ নিজহাতে সম্পূর্ণ করিবার সুযোগ পাইবে। তাহাতে শিল্পশিক্ষা ও নৈতিক চরিত্রগঠন যথেষ্টই হইতে থাকিবে। অধিকন্তু, আনুষঙ্গিকভাবে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের অশেষবিধ উৎকর্ষ এবং সাধারণ সভ্যতা বিষয়েও ইহাদের ধারণা পরিষ্কার হইবে। এইগুলি কি কম লাভ? আমার বিবেচনায় এজন্য ঘরবাড়ীগুলি যদি অতি বিশ্রী ভাবেই তৈয়ারী হয় তাহাতেও দুঃখ করা উচিত নয়।”

 আমি আরও বলিতাম, “আমাদের ছেলেরা সকলেই গরিব। ইহারা পল্লীগ্রামে বাস করে। ইহাদের গৃহসম্পত্তির মধ্যে একটা করিয়া কাঠের কামরা আছে মাত্র। তূলা, চিনি ও চাউলের আবাদে ইহাদিগকে সারা দিন খাটিতে হয়। বলা বাহুল্য, ইহারা যদি আমাদের বিদ্যালয়ে প্রথমেই একটা প্রকাণ্ড রাজপ্রাসাদের মত বাড়ীতে থাকিতে পায় তাহাহইলে ইহাদের আনন্দের ও গৌরবের সীমা থাকিবে না। ইহা স্বাভাবিক, কারণ কষ্টের পর সকলেই সুখ আশা ও ইচ্ছা করে। কিন্তু আমরা যদি এই অবস্থায় ইহাদিগকে কিছু নূতন আদর্শ ও জীবনের নূতন লক্ষ্য না দিতে পারি তাহা হইলে আমরা ইহাদের জন্য কি করিলাম? পূর্ব্বে ইহারা যে চিন্তা ও যে ধারণা লইয়া লেখা পড়া শিখিতে আসিয়াছিল গৃহে ফিরিবার সময়েও ইহাদের সেই চিন্তাও ধরিয়া থাকিয়া যাইবে না কি?