পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোলামাবাদের আব্‌হাওয়া

 ভগবানের কৃপায় আমরা সকল সংবাদই পাইতাম। এমন কি, আমাদের প্রভুরা খবর পাইবার পূর্ব্বেই অনেক সময়ে ব্যাপার বুঝিয়া লইতাম। কথাটা কিছু হেঁয়ালির মত বোধ হইবে বটে, কিন্তু রহস্য আর কিছুই নয়। শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের পরনির্ভরতাই আমাদের এ বিষয়ে বিশেষ উপকার করিত। আমরা তাঁহাদের গোলাম সত্য, কিন্তু আমাদের মনিবেরাও অনেক বিষয়ে আমাদেরই গোলাম ছিলেন। আমাদের সাহায্য না পাইলে তাঁহাদের এক পাও চলিবার ক্ষমতা ছিল না। গোলামেরাই ডাকঘর হইতে চিঠিপত্র লইয়া আসিত। সপ্তাহে দুই বার করিয়া ডাকঘরে যাওয়া-আসা করিতে হইত। সেই সুযোগে ডাকঘরের নিকট জটলা ও মজলিশ এবং খোসগল্প ইত্যাদি হইতে দাস-পত্রবাহক সকল অবস্থা বুঝিয়া লইত। ফলতঃ, প্রভুরা চিঠিপত্র পাঠ করিয়া বৃত্তান্ত জানিতে পারিবার পূর্ব্বেই গোলামমহল্লায় সংবাদ প্রচারিত হইয়া পড়িত।

 মায়ে ভায়ে সকলে এক সঙ্গে বসিয়া কখনও আমি আহার করিয়াছি—এরূপ মনে হয় না। গোলামখানার খাওয়া কোন উপায়ে নাকে চোখে গোঁজা মাত্র। তাহাকে আহার বলে না। গরু ছাগল ইত্যাদি যেরূপ চরিয়া বেড়ায় এবং যেখানে যাহা পায় তাহাই খায়, আমাদেরও ভোজনব্যাপার সেইরূপই ছিল। কোন সময়ে কাজ করিতে করিতে হয়ত একটুকরা মাংস খাইলাম। কখনও বা দুই একটা পোড়ান আলু হাঁটিতে হাঁটিতে চিবাইতে হইত। মাঝে মাঝে উননের কড়া হইতেই তুলিয়া