পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অসাধ্য সাধন
১৭৩

ভোজন শালার কামরা রাখা হয় নাই। কাজেই নূতন করিয়া প্রস্তুত করিতে হইল। আবার ছাত্রদিগকে ডাকিয়া পরামর্শ করা গেল। স্থির করিলাম যে, গৃহের নীচে একটা গর্ত্ত করিতে হইবে। মেজে কাটিয়া মাটি তোলান হইল। একটা বড় গর্ত্তের মত জায়গা প্রস্তুত করিলাম। সেই স্থানেই রন্ধন ও ভোজনের ব্যবস্থা হইবে।

 এখন ছাত্রাবাস চালান যায় কি করিয়া? কাজ আরম্ভ করিতে পয়সার প্রয়োজন। থালা বাটি টেবিল চেয়ার ইত্যাদি না হইলে ছাত্রদিগকে শৃঙ্খলা ও ভোজনের রীতি শিখাইব কি করিয়া? বাজারে ধার পাওয়া সহজ নয়। স্টোভও নাই যে ভাল রান্না করা যাইবে। অগত্যা বাহিরেই কাঠ জ্বালাইয়া সেকেলে নিয়মে রান্না করান যাইতে লাগিল। বাড়ী তৈয়ারী করিবার সময়ে যে সকল বেঞ্চের উপর রাখিয়া কাঠ পালিশ করা হইত সেই বেঞ্চগুলিকে খানা খাইবার টেবিল করা গেল। আর থালা, বাটি বেশী সংগ্রহ করিয়া উঠা গেল না।

 গৃহস্থালী চালাইতে কেহই জানে না বুঝিলাম। নিয়মিত সময়ে খাইতে হয় তাহাই ছাত্রদের জানা নাই। তারপর সকল দিক দেখিয়া শুনিয়া সকল ছাত্রের সুখ সুবিধা বুঝিয়া কাজ করা সেত আরও কঠিন। প্রথম দুই তিন সপ্তাহ সকল বিষয়েই হট্টগোল চলিল—কেহ খাইতে পাইল, কেহ পাইল না। কেহ এক তরকারী কম, কেহ বা বেশী পাইল। কোন খাদ্যে নুন বেশী, কোন খাদ্য বেশী পুড়িয়া গিয়াছে। বিশৃঙ্খলার চূড়ান্ত।