পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৪
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

 আমি এই সব দেখিতাম তথাপি উন্নতির জন্য চেষ্টিত হইতাম না। ভাবিতাম দেখা যাউক, আপনা আপনি শৃঙ্খলা গড়িয়া উঠে কি না। এক দিন সকাল বেলার খাওয়া চলিতেছে। আমি ঘরের কোণে দাঁড়াইয়া চুপি চুপি শুনিতে লাগিলাম। ছাত্রছাত্রীরা মহা হাল্লা আরম্ভ করিয়াছে। সকলের মুখেই বিরক্তির ভাব। কারণ সে বেলা কাহারই কপালে খাওয়া জুটিল না সমস্ত রান্নাটাই পুড়িয়া অখাদ্য হইয়া গিয়াছে। একজন ছাত্রী বকিতে বকিতে কূপের নিকট গেল। ভাবিয়াছিল কূপ হইতে জল তুলিয়া খাইবে এবং জল পান করিয়াই সকাল বেলার ভোজন শেষ করিবে। যাইয়াই দেখে কূপের দড়ি ছেঁড়া। তাহার জল পান করা হইল না। মহা বিরক্ত হইয়া বলিতে লাগিল “আঃ, এই স্কুলে একটুকু জল খাইতেও পাই না!” আমি নিকটেই ছিলাম সে আমাকে দেখিতে পায় নাই।

 একসময়ে আমাদের নূতন বন্ধু বেড্‌ফোর্ড টাস্কেজী বিদ্যালয়ের অতিথি হইয়াছিলেন। ভোর রাত্রে তিনি শুনিতে পাইলেন তাঁহার নীচের ঘরে মহা গোলযোগ হইতেছে। ব্যাপার কি? ছাত্রদের প্রাতরাশ চলিতেছে। দুইজনের মধ্যে ঝগড়া বাঁধিয়াছে পেয়ালায় কাফি খাওয়া আজ কা’র পালা? আগেই বলিয়াছি আমাদের তখনও বাসন কোসন থালা বাটি বেশী জুটে নাই। কাফি পান করিবার জন্য পেয়ালা সকলেই রোজ পাইত না। তিন চারিদিন পর এক এক জনের ভাগ্যে পেয়ালা পড়িত।

 ছাত্রাবাসের এই দুর্দ্দশা অবশ্য বেশী দিন ছিল না। ক্রমশঃ