পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিক্ষালয়ে বিশ্বশক্তি
১৭৭

এখন স্থানাভাবও বেশ ভোগ করিতে হইল। কাজেই স্কুলের নিকটে নূতন ছাত্রদের জন্য কতকগুলি কাঠের কামরা ভাড়া করিয়া লইলাম। এ গুলির বড়ই জীর্ণ অবস্থা। শীতকালের ঠাণ্ডা বাতাসে ছেলেরা অত্যন্ত কষ্ট পাইতে লাগিল।

 আমরা ছেলেদের নিকট মাসিক ২৪৲ টাকা করিয়া লইতাম। ঘরভাড়া, খাওয়া, স্নানের জল, ঘর গরম করিবার জন্য কয়লা ইত্যাদি সকল খরচই এই টাকায় চলিত। এই সঙ্গে বলা আবশ্যক যে, মাত্র ২৪৲ টাকায় কুলাইত না। খরচ আরও বেশী পড়িত। কিন্তু অনেক ছাত্রই স্কুলের নানা কাজ করিয়া দিত। এজন্য তাহাদের বেতন না দিয়া আবশ্যক খরচ হইতে কাটিয়া রাখিতাম। বিদ্যালয়ে পড়িবার খরচ বার্ষিক ১৫০৲ টাকা। এই টাকাটা আমরা নানা স্থান হইতে সংগ্রহ করিয়া দিতাম। সুতরাং এই বিদ্যালয়কে ছাত্রদের পক্ষে অবৈতনিক বলা যাইতে পারে।

 দেখা গেল, ছাত্রদের নিকট মাস মাস নগদ ২৪৲ টাকা মাত্র আদায় হইত। সকলের টাকা একত্র করিয়া একসঙ্গে খরচ চালাইতে কিছু সুবিধাই পড়িত সন্দেহ নাই। কিন্তু হাতে কিছুই বাঁচিত না। অথচ পুঁজি বা মূলধন না থাকিলে ছাত্রাবাসের হোটেলখানা ভাল করিয়া চালান কঠিন। আমরা শুইবার ঘরে খাট, গদি, তোষক ইত্যাদি কিছুই জোগাইতে পারিতাম না। শীতকালের রাত্রে ছেলেরা কষ্ট পাইত। রাত্রে উঠিয়া, অনেক সময়ে আমি তাহাদিগকে সান্ত্বনা দিতে যাইতাম।