পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বালয়ে বিশ্বশক্তি
১৮১

আলাপ করেন, সম্মান করেন, ভোজ দেন। আমি তাহাতে বড়ই বিব্রত বোধ করি। একদিন উত্তর অঞ্চলে রেলে যাইতেছিলাম। অত্যন্ত ক্লান্ত থাকায় বেশী পয়সা দিয়া শুইবার কামরার জন্য টিকিট করিয়াছিলাম। রেলগাড়ীর এই কামরাগুলিকে “পুলম্যান শ্লীপার” বলে। গাড়ীতে উঠিয়াই দেখি দুইজন ইয়াঙ্কি রমণী। ইহাঁদিগকে আমি চিনিতাম। ইহাঁরা বোষ্টন-নগরের বড়ঘরের মেয়ে। ইহাঁরা আমাকে তাঁহাদের কামরায়ই জায়গা দিলেন। আমি ভাবিলাম—ইহাঁরা বোধ হয় দক্ষিণ অঞ্চলের আদব কায়দা জানেন না। যাহা হউক, তাঁহাদের উপরোধে সেই কামরাতেই গেলাম। পরে দেখি, ইহাঁদের আদেশ অনুসারে গাড়ীর হোটেলওয়ালা খানা আনিয়া হাজির করিল। আমি বড়ই লজ্জিত হইতেছিলাম। গাড়ীর মধ্যে অনেক শ্বেতাঙ্গ পুরুষ ছিলেন। তাঁহারা আমাদের দিকে দেখিতে লাগিলেন এবং কাণাঘুষা করিতে লাগিলেন। আমি রমণীদ্বয়ের নিকট বিদায় চাহিলাম। তাঁহারা কোন মতেই ছাড়িলেন না। আমাকে তাঁহাদের সঙ্গে এক টেবিলে নৈশভোজন করিতে হইল!

 কেবল তাহাই নহে। তাঁহাদের একজনের ব্যাগে নূতন ফ্যাসানের একপ্রকার উৎকৃষ্ট চা ছিল। তিনি জানিতেন হোটেলের বাবুরচি সে চা কখনও দেখে নাই। সুতরাং তাহারা উহা ভাল করিয়া তৈয়ারী করিতে পারিবে না। এজন্য তিনি নিজেই উঠিয়া গিয়া হোটেল হইতে চা তৈয়ারী করিয়া আনিলেন। আমার জন্য শ্বেতাঙ্গদিগের এত আয়োজন! প্রায় ১॥-২ ঘণ্টা