অনায়াসে চলিতে পারিত। ইহাঁরা বিলাসসাগরে সাঁতার কাটিতেছেন—নিজ সুখভোগে অর্থের অপব্যয় করিতেছেন—অথচ দশের কাজে এক পয়সাও দিতে নারাজ।” ইহাঁরা সকলেই মহাদুঃখে এরূপ কথা বলিয়া থাকেন। ইহাঁদের উদ্দেশ্য ভালই—কারণ ইহাঁরা লোকহিতব্রতে বাহির হইয়াছেন। কিন্তু আমার বিশ্বাস, ইহাঁদের বিষয়টা একটুকু গভীরভাবে না বুঝিবার দোষ আছে।
আমি এইরূপ পরোপকার ব্রতধারী লোকসেবক ভিক্ষুকগণকে বলিয়া থাকি, “মহাশয়, মনে করুন, দেশে একজনও ধনী লোক নাই। মনে করুন বড়লোকদিগের টাকাকড়ি সবই সংসারের সকল লোকের মধ্যে বিভক্ত করিয়া দেওয়া হইল। ভাবিয়া দেখুন ত, তখন দেশের অবস্থা কি হইবে? এই যে এত বড় বড় কারবার, কারখানা, ফ্যাক্টরী, জাহাজ কোম্পানী, চাষ বাস ইত্যাদি কত কি দেখিতেছেন—এই সমুদয়ের একটাও থাকিবে কি? এইগুলি না থাকিলে এত কুলীমজুর কেরাণী কর্ম্মচারীর অন্নসংস্থান হইবে কি? দেশময় দারিদ্র্য দুঃখ ছড়াইয়া পড়িবে যে! দেশের কৃষি শিল্প, বাণিজ্য সবই লুপ্ত হইয়া যাইবে যে! সমাজের লক্ষ্মীশ্রী কোথায়ও থাকিবে না। বড় লোকেরা কি সত্য সত্যই সমাজের পাপ ও কলঙ্কস্বরূপ?”
ধনীলোক সম্বন্ধে আমার আরও অনেক বক্তব্য আছে। আমি আমার ‘ভিক্ষুক’ বন্ধুগণকে বলিয়া থাকি, “কত শত লোক ধনী মহাত্মাদের দ্বারা প্রতিপালিত হয় আপনারা তাহার খবর রাখেন? প্রত্যেক ধনী ব্যক্তিরই গুপ্তদান অসংখ্য আছে। সকল