পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০০০ মাইল দূরে ৫ মিনিটের বক্তৃতা
২১১

বিদ্যালয়ে থাকিবার পর তাহাদিগকে দিবাবিদ্যালয়ে ভর্ত্তি করা যাইত। তখন তাহাদিগের পুঁজি টাকা হইতে খাওয়া খরচ চলিত। এই উপায়ে নৈশবিদ্যালয়ের কার্য্য গত ১৫ বৎসর চলিয়াছে। আজ ইহার ছাত্রসংখ্যা ৪৫৭।

 আমি নৈশবিদ্যালয়ের খুব পক্ষপাতী। কারণ ইহার নিয়মে ছাত্রের অগ্নি-পরীক্ষা হইয়া যায়। বিদ্যাশিক্ষার জন্য আন্তরিক আকাঙ্ক্ষা না থাকিলে কেহ এত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করিয়া এইরূপে জীবন চালাইতে পারে না।

 দিবা-বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি হইবার পরও এই ছাত্রদিগকে কোন ব্যবসায়ে লাগাইয়া রাখিতাম। সপ্তাহে অন্ততঃ দুই দিন তাহাদিগকে কাজ করিতে হইত। সপ্তাহের অপর ৪ দিন তাহারা সাধারণ ছাত্রের ন্যায় লেখাপড়া শিখিত। তাহা ছাড়া গরমের ছুটির সময়ে তিন মাস পুরাপুরি তাহাদিগকে খাটিতে হইত। এইরূপে নৈশবিদ্যালয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া এবং পরে দিবাবিদ্যালয়ের শিক্ষা পাইয়া অনেক নিগ্রো পুরুষ ও রমণী ‘মানুষ’ হইয়া গিয়াছে। আজ নিগ্রোসমাজে বহু লব্ধপ্রতিষ্ঠ শিল্পী ও ব্যবসায়ী দেখিতে পাই। তাঁহাদের অনেকেই এই নৈশবিদ্যালয়ের অগ্নি-পরীক্ষার ভিতর দিয়া জীবন আরম্ভ করিয়াছেন। আমাদের নৈশবিদ্যালয়ে জীবন যাপন করিলে কেহই ভবিষ্যতে কর্ম্মঠ চাষী বা কারিগর না হইয়া যায় না।

 কৃষি শিল্প ব্যবসায়ের কথা এত বলিতেছি! কেহ যেন না ভাবেন যে আমরা আধ্যাত্মিক বিষয়ে নিতান্ত অমনোযোগী।