পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০০০ মাইল দূরে ৫ মিনিটের বক্তৃতা
২২৭

সময়ে একজন শ্বেতাঙ্গ চাষী আমাকে ঠাট্টা করিয়া বলিল,—“কিহে ওয়াশিংটন ভায়া এতদিন তুমি উত্তর অঞ্চলের ইয়াঙ্কি মহলে বক্তৃতা মারিয়াছ। অথবা তোমার স্বজাতিগণকে তাহাদের কর্ত্তব্য শিখাইয়াছ এবং কখনও কখনও দক্ষিণের শ্বেতাঙ্গ মহলেও আমাদের উপর গলাবাজী করিয়াছ। কিন্তু এবার তোমাকে এক সঙ্গে সকল মহলেই কথা বলিতে হইবে। দেখিতেছি তুমি এবার শক্ত পাল্লায় পড়িয়াছ। এবার উদ্ধার পাইলে বুঝিব ওয়াশিংটন সত্যসত্যই একজন মানুষ।” চাষী আমার মনোভাব ঠিক বুঝিতে পারিয়াছিল—সত্যই আমার তখনকার অবস্থা বড় কঠিন।

 আমি রেলে চলিলাম। ষ্টেসনে ষ্টেসনে কত শ্বেতাঙ্গ কৃষ্ণাঙ্গ আমার সম্মুখে দাঁড়াইয়াই আমার সম্বন্ধে আলোচনা করিতে লাগিল। আমার দিকে অনেকে আঙ্গুল দিয়া অন্যকে দেখাইয়া দিল। গাড়ী হইতে আটলাণ্টায় পদার্পণ করিবামাত্র এক বৃদ্ধ নিগ্রো আর একজনকে বলিল “ঐ লোকটা কালকার সভায় আমাদের স্বজাতির পক্ষ হইতে বক্তৃতা করিবে। আমি সভায় শুনিতে যাইবই স্থির করিয়াছি।”

 আটলাণ্টায় সেদিন লোকে লোকারণ্য হইয়া গিয়াছে। আমেরিকার ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশ হইতে প্রতিনিধি, দর্শক, ব্যবসায়ী ও শিল্পীর সমাগম হইয়াছে। সেনাবিভাগের লোকজন আসিয়াছে। ভিন্ন ভিন্ন দেশের কর্ম্মচারী এবং রাষ্ট্রীয় দূতগণও সমবেত হইয়াছে। আটলাণ্টায় সেদিন বিশ্বের মহাবাজার বসিয়াছে বোধ হইল।