পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫৮
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

বলিলেই চলে। সে কথা আমার মন হইতে এত দূরে চলিয়া গিয়াছে, যে আপনাদের এই পত্র পাইবার পূর্ব্বে তাহা ভুলিয়াই গিয়াছিলাম। যাহা হউক, আমি আপনাদের সম্মান করিতে পারিলাম না। আমি আমেরিকা ছাড়িয়া গেলে, টাস্কেজীর অন্যান্য ক্ষতি কিছু হইবে না। কিন্তু আজকাল খরচ এত বাড়িয়াছে যে, সে সমুদয় আমি ব্যতীত আর কেহ সংগ্রহ করিতে পারিবে না। সুতরাং আমার ইউরোপ ভ্রমণ এবং টাস্কেজীর সর্ব্বনাশ এক কথা।”

 আমার পত্র পাইয়া একজন লিখিলেন,—“টাস্কেজীর খরচপত্রের জন্য ভাবিবেন না। আমরা তাহার সমস্ত দায়িত্ব লইতেছি। শ্রীযুক্ত হিগিনসন এবং তাহার বন্ধুবর্গ আপনার অনুপস্থিতিকালে বিদ্যালয়ের ব্যয়ের জন্য আবশ্যক টাকা দিবেন। তাঁহারা নিজেদের নাম প্রকাশ করিতে অনিচ্ছুক। সুতরাং আর আপত্তি করিবার আপনার অধিকার নাই।”

 কাজেই আমি ইউরোপ যাইতে বাধ্য হইলাম। আমার মনে অনেক কথা আসিতে লাগিল। আমার শৈশবের গোলামাবাদ, গোলামখানার অনশন ও অনিদ্রা, যৌবনের কঠোর জীবনসংগ্রাম—সর্ব্বদা দারিদ্র্য ও নৈরাশ্যের সহিত পরিচয়—সকল চিত্রই সম্মুখে উপস্থিত হইতে লাগিল। প্রৌঢ় বয়সের পূর্ব্বে আমি কখনও টেবিলে বসিয়া খানা খাইবার সুযোগ পাই নাই। ইউরোপ, লণ্ডন, প্যারি,—এ সকল স্থানকে আমি মানবদুর্ল্লভ স্বর্গরাজ্য বিবেচনাই করিতে শিখিয়াছি। আজ আমি সেই স্বর্গ-