পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইউরোপে তিনমাস
২৫৯

রাজ্যে বেড়াইতে চলিলাম! আজ আমি সুন্দর পোষাকে, সুখাদ্য ও সুপেয় উপভোগ করিতে করিতে ইউরোপ ভ্রমণে বাহির হইব! আমার নিকট সবই স্বপ্নের ন্যায় অলীক বোধ হইতে লাগিল।

 আরও দুইটি চিন্তায় আমি কষ্ট পাইতে লাগিলাম। মনে হইল—আমার জাতিরা আমাকে কি বলিবে? তাহারা ত বুঝিবে না যে, আমি বাধ্য হইয়া ইউরোপ যাইতেছি। তাহারা সহজেই ধরিয়া লইবে, আমার ‘চাল’ বাড়িয়াছে—আমি আজকাল বড় লোকের সঙ্গে মিশি, বড়মহলে চলাফেরা করি, সুখে স্বচ্ছন্দে দেশ বিদেশ ঘুরিয়া বেড়াই, এবং নানা উপায়ে নামজাদা লোক হইতে চেষ্টা করি। তাহারা আমার হৃদয়ের কথা ত বুঝিবে না—তাহারা আমাকে ক্ষমা করিবে না। তাহারা বলিবে, ‘জানি জানি খানিকটা কাজ করিবার পর সকলেরই মাথা বিগ্‌ড়াইয়া যায়—সকলেই ‘ধরাকে সরা’ জ্ঞান করে। ঐ সেদিন দেখিলে না, আর একজন নিগ্রো অধঃপাতে গেল। ভাবিয়াছিলাম সেই লোকটার দ্বারা নিগ্রো সমাজের উপকার হইবে। কিন্তু অল্পদিনের ভিতরই, সে সকলকে অগ্রাহ্য করিতে শুরু করিল। সে যেন কি অপরূপ জীব স্বর্গ হইতে মর্ত্ত্যে নামিয়া আসিয়াছে। সে আজ আমাদের পূজা চায়! ওয়াশিংটনও দেখিতেছি সেই বাবুগিরি ও ‘নেতা’-গিরির পথ ধরিল। ভাই, কথায় বলে, প্রতিষ্ঠা ও যশের আকাঙ্ক্ষা সাধু পুরুষদেরও ছাড়ে না। আর, একবার প্রতিষ্ঠার দিকে নজর গেলে কোন লোকের দ্বারা সংসারের