পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইউরোপে তিনমাস
২৬৫

সুখভোগে ও বিলাসে যেন হাবুডুবু খাইতেছে। ইহাদের নৈতিক চরিত্র বড় বেশী উচ্চ অঙ্গের ভাবিতে পারিলাম না। আমাদের কৃষ্ণাঙ্গসমাজ অপেক্ষা ফরাসীজাতির এ বিষয়ে কোন উৎকর্ষ লক্ষ্য করা গেল না। অবশ্য ইহারা আমাদের অপেক্ষা পুরাতন জাতি। ইউরোপের বিশাল মানবসমাজের মধ্যে থাকিতে থাকিতে ইহাদের বিদ্যাবুদ্ধি খানিকটা বেশী মার্জ্জিত হইয়াছে। জীবনসংগ্রামের অত বড় আবর্ত্তের মধ্যে পড়িয়া বাঁচিয়া থাকিতে হইলে নানা প্রকার সামর্থ্যের প্রয়োজন হয়। আর সংগ্রাম করিতে করিতে নানাবিধ শক্তি নূতন অর্জ্জিতও হইয়া থাকে। আমার স্বজাতিও কালে এইরূপ শক্তিসম্পন্ন হইয়া উঠিবে—সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। ফরাসীরা জীবন কিছু আগে আরম্ভ করিয়াছে—আমরা সংসারে কিছু পরে আসিয়া দেখা দিয়াছি। এই যা প্রভেদ। ফরাসীদিগকে সত্যবাদী মনে হইল না। তাহারা কথার মূল্যও বেশী স্বীকার করে না। এ সকল বিষয়ে উহারা আমেরিকার নিগ্রোর অপেক্ষা উচ্চ স্তরের লোক কোন মতেই নয়। কোন কোন বিষয়ে নিগ্রোরাই উহাদের অপেক্ষা বোধ হয় উন্নত। কারণ জীবে দয়া ইহাদের নাই বলিলেই চলে। ইহারা গো-বলদ ইত্যাদি জীবজন্তুর প্রতি বড়ই নির্ম্মম। মোটের উপর, ফ্রান্স ছাড়িয়া যাইবার সময়ে আমার স্বজাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে অতি উজ্জ্বল আশাই আমার চিত্ত অধিকার করিল।

 প্যারি হইতে লণ্ডনে পৌঁছিলাম। তখন জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ। ইংলণ্ডের রাজধানীতে মহা সমারোহ চলিতেছে।